রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে বাজে খাদ্যাভ্যাস

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১

স্বাস্থ্য ডেস্ক : রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সবসময়ই খাদ্যাভ্যাসের ওপর জোর দেওয়া হয়। তবে কোন খাবারগুলো দেহে বাজে প্রভাব ফেলে সেই বিষয়ে নজর দেওয়া হয় কম।

ফলে দেখা যায় ভালো খাবার খাওয়া হচ্ছে ঠিকই, পাশাপাশি বাজে খাদ্যাভ্যাসের কারণে দেহ সঠিক সুরক্ষা মিলছে না।

তাই বাজে খাদ্যাভ্যাসগুলো এড়ানোই হবে মঙ্গল।

অতিরিক্ত মদ্যপান : যুক্তরাষ্ট্রের নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ ম্যারি অ্যালবাস ‘ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “অতিরিক্ত মদ্যপান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করবে। বিশেষ করে যেকোনো সংক্রমণ দমন করার জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সক্রিয় হওয়ার ক্ষমতা কমে যায় মদ্যপানের জন্য। কারণ অ্যালকোহলের কারণে শরীর ক্ষতিকর উপাদান চিনতে এবং তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সময় বেশি লাগে।”

“মদ্যপানের আরেকটি ক্ষতিকারক দিক হল তা খাবার থেকে পুষ্টি ‍উপাদান শোষণের হার কমিয়ে দেয়। বিশেষত, ভিটামিন সি এবং জিঙ্ক শোষন করতে সমস্যা দেখা দেয়। আর দুটোই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মদ্যপানের কারণে যেকোনো রোগের ঝুঁকি যেমন বাড়বে, তেমনি রোগের ভোগান্তিও বাড়তে পারে।”

অতিরিক্ত চিনি : অ্যালবাস বলেন, “খাদ্যাভ্যাসে অতিরিক্ত চিনি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। চিনি বেশি এমন খাবার নিয়মিত খাওয়া ক্রমাগত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে হুমকির মুখে ফেলে। এর প্রধান কারণ শ্বেত রক্তকনিকা, যা সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াই করে। অতিরিক্ত চিনি সেই শ্বেত রক্তকনিকারই ক্ষতি করে।”

অতিরিক্ত লবণ : ‘দ্য ডায়েটারি গাইডলাইনস ফর আমেরিকানস’য়ের মতে, ‘প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন সোডিয়াম গ্রহণ করা উচিত সর্বোচ্চ ২৩০০ মি.লি.গ্রাম। তবে যুক্তরাষ্ট্রে মানুষ প্রতিদিন গড়ে ৩৪০০ মি.লি.গ্রাম সোডিয়াম গ্রহণ করে। এই বাড়তি সোডিয়াম দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।

অ্যালবাসের ভাষায়, “খাদ্যাভ্যাসে অতিরিক্ত সোডয়ামযুক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি থাকলে শরীরে প্রদাহ হওয়া আশঙ্কা বেড়ে যায়, যা পক্ষান্তরে দুরারোগ্য ব্যধির ঝুঁকি বাড়ায়। লবণের মূল উপাদান সোডিয়াম। লবণ বেশি খেলে তা শরীরের প্রদাহনাশক প্রতিক্রিয়াকে দমিয়ে দিতে সক্ষম। অন্ত্রের ব্যাক্টেরিয়ার পরিবর্তন ঘটাতে পারে অতিরিক্ত সোডিয়াম বা লবণ। যা পক্ষান্তরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়।”

‘ক্রোন’স ডিজিজ’, আলসার, ‘সেলিয়াক ডিজিজ’, ‘লুপাস’ ইত্যাদি ‘অটোইমিউন ডিজিজ’ যাদের আছে, অতিরিক্ত লবণ তাদের এই রোগগুলোর তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়।

ফল ও সবজি কম খাওয়া : যুক্তরাষ্ট্রের আরেক নিবন্ধিত পুষ্টিবিদন ম্যাট মাজিনো বলেন, “রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সচল ও সক্ষম রাখতে হলে খাদ্যাভ্যাসে পর্যাপ্ত ফল ও সবজি থাকতেই হবে। এগুলোতে থাকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ, ‘অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’ যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য অত্যন্ত জরুরি।”

আরও থাকে ভোজ্য আঁশ যা অন্ত্রের ব্যাক্টেরিয়ার জন্য উপকারী। আর অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় থাকলেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকবে শক্তিশালী।

ভিটামিন ডি’র অভাব : মাজিনো বলেন, “সুস্থ সবল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান ভিটামিন ডি। কারণ এর প্রদাহনাশক গুণ রোগ প্রতিরোধকারী কোষের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। তাই যারা ঘরে বসে কাজ করার কারণে বাইরে রোদে বের হতে পারেন না বা যে দেশগুলোতে এখন বর্ষাকাল, সেখানকার মানুষের উচিত হবে ভিটামিন ডি ‘সাপ্লিমেন্ট’ গ্রহণের বিষয়টা নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে আলাপ করা।”

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com