এতো অভিযোগ, তবুও বহাল তবিয়তে সৈয়দ আলম! পর্ব ১

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক: নাম সৈয়দ আলম। ডেপুটি ম‍্যানেজার মেঘনা মডেল সার্ভিস। পরীবাগ অফিস।ইকবাল হাসান তপু, মাদারিপুর -৩ এর এমপির লোক এই পরিচয়ে যত প্রকার দুর্নীতি আছে সবই করেছে সৈয়দ আলম,অর্থাৎ দুর্নীতি যেন তার নেশায় পরিণত হয়েছে। শুধুমাত্র মেঘনা মডেল সার্ভিসের তেল বিক্রি করে গড়ে তুলেছেন শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ।

সৈয়দ আলম দায়িত্ব পালনকালে কোম্পানির সেলস অফিস ও ডিপোগুলোতে বৃদ্ধি পেয়েছে অনিয়ম ও দুর্নীতি; বেড়েছে নিম্নমানের জ্বালানি তেল সরবরাহ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, চাকরি জীবনের শুরু থেকেই সৈয়দ আলম ছিলেন বেপরোয়া। কখনোই চাকরি বিধিমালার তোয়াক্কা করেননি। যখন যেখানে দায়িত্ব পালন করেছেন, সেখানেই নানান অনিয়মে জড়িয়েছেন।

মাদারিপুর -৩ আসনের এমপি তার কাছের লোক পরিচয় দেওয়ায় এতদিন তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলেননি। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে অনেকেই তার বিরুদ্ধে এখন সবাই মুখ খোলা শুরু করেছে।

প্রতারণা ও অপরাধ সাম্রাজ্য দিয়ে গড়েছেন সম্পদের পাহাড় :

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নিয়োগ ও পদোন্নতি বাণিজ্য, ডিপো থেকে মাসিক লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায়, অর্থ আত্মসাৎ, প্রতিষ্ঠানের গাড়ি ও জ্বালানি বহনকারী ট্যাংকের মেরামতের ভুয়া বিলের মাধ্যমে বিশাল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করেন সৈয়দ আলম।

এ ছাড়া বদলি বাণিজ্য, ভুয়া সম্মেলনের নামে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ, বার্জ মেরামতের নামে স্ক্রাপ প্লেট খুলে বিক্রিপূর্বক আত্মসাৎ এবং নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেন তিনি।

এভাবে কোটি কোটি টাকা অবৈধ আয়ের মাধ্যমে তিনি নিজ ও স্ত্রী-সন্তানের নামে-বেনামে বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় কোটি কোটি টাকা মূল্যের প্লট ও ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন। যা তদন্ত করলে থলের বেড়াল বেরিয়ে আসবে বলে দাবি করেন মেঘনা প্রেট্রোলিয়ামের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী।

দুর্নীতিকে রীতিমত ‘শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি’ কয়েক বছরেই শত-শত কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করে নিয়েছেন তিনি! দুর্নীতিতে আলমের অর্জন হাজার কোটি টাকা।

কোটি কোটি টাকা নয়ছয় নাহলে সেটা আবার দুর্নীতি না কি?

অনুসন্ধানে জানা যায়, মেঘনা মডেল সার্ভিসের ডেপুটি ম‍্যানেজার সৈয়দ আলম দুর্নীতি করে তেল চুরি করে প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা দুর্নীতি করেছেন। সেই টাকার ভাগ আবার আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে ভাগবাটোড়াও করতেন নিয়মিত। মেঘনা মডেল সার্ভিসের এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা দুর্নীতি করে ঢাকা সহ একাধিক জায়গায় ফ্লাট ও বাড়ির মালিক হয়েছেন।

কোটি কোটি টাকা নয়ছয় নাহলে সেটা আবার দুর্নীতি না কি? তা যেন প্রমান করতে বদ্ধপরিকর এই দুর্নীতিবাজ সৈয়দ আলম

এসব নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ বিভিন্ন সময়ে কোম্পানির পক্ষ থেকে তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তিনি ক্ষমতাসীন সরকারের প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে প্রভাব খাটিয়ে তা বন্ধ করে দেন।

বিভিন্ন রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সাথে তিনি নিজেকে পরিবর্তন করে নিয়েছেন। আওয়ামীলীগার সেজে বঙ্গবন্ধু পরিবারের কাছের আত্মীয় দাবি করে প্রভাব বিস্তার করে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি চালিয়ে গেছেন।

সাবেক মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের ম‍্যানেজিং ডাইরেক্টর মীর সাইফুল্লাহ আল খালেদ তাকে জুনিয়র থেকে সিনিয়র করে ঐখানে পদায়ন করে। যে ম‍্যানেজিং ডাইরেক্টর এখন কানাডা পালিয়েছে। এই মেঘনা মডেল সার্ভিসেস থেকে আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাত করে। এই টাকা মাসোয়ারা হিসেবে স্বৈরাচারী হাসিনার বিদ‍্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সহ কোম্পানির উদ্ধতন কর্মকর্তাদের প্রতি মাসে পাঠিয়ে থাকে। মেঘনা মডেল সার্ভিসেস প্রতি মাসেই তেল বিক্রয়ে লস দেখানো হয়। আর এই টাকা বিভিন্ন পর্যায়ে বাটোয়া হয়।

এছাড়াও চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য শ্রমিকদের কাছ থেকে কোটি টাকা ঘুষ নেন তিনি। মেঘনার সিবিএ নেতা থেকে শুরু করে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পর্যন্ত অনেকেই এই ঘুষ-বাণিজ্যে জড়িত।

বাংলাদেশে দুর্নীতির সমস্যা অনেক বেশি প্রকট।

সে যখন একাই হাজার কোটি টাকার মালিক হয়ে যায়, তখন বোঝা যায় দুর্নীতিবাজদের শেকড় কতটা গভীর।

সৈয়দ আলমের দূর্নীতির ব্যাপারে দুদকের এক উপ-পরিচালকের দৃষ্টি আর্কষন করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে বা পত্র-পত্রিকায় এ সংক্রান্ত কোন প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে আইনানুনাগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com