লিভারপুলের হয়ে শেষ ম্যাচে গোল করে বাঁচালেন ফিরমিনো

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় রবিবার, ২১ মে, ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : ৮ মৌসুম লিভারপুলে কাটিয়েছেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার রবার্তো ফিরমিনো। দল ও সমর্থকদের সঙ্গে সেই সম্পর্কও হয়ে উঠেছিল আবেগের। তাই তো বিদায়ের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে বেদনার নীলে ভাসছিলেন একটু একটু করে। তবে সেই বিদায়ের দিনেই আরেকবার শেষ মুহূর্তে ফিরমিনো ত্রাতা হয়ে উঠলেন। ৭২ মিনিটে তিনি যখন বদলি হিসেবে নামেন, তখনও লিভারপুল ১-০ গোলে পিছিয়ে। নিশ্চিত হারের দিকে এগোতে থাকা ম্যাচে ফিরমিনো গোল করেই বাঁচিয়েছেন অ্যানফিল্ডের দলটিকে।

এরকম ড্র-য়ের ম্যাচ লিভারপুল আরও অনেক দেখেছে, কিন্তু এই ম্যাচের মতো এতটা খুশি তারা আগের কোনো ড্রয়ে হয়েছিল কিনা তা জানতে অতীতে ফিরতে হবে। তবে লিভারপুল-অ্যাস্টন ভিলার চিত্রনাট্যটা রোমাঞ্চকরভাবেই লিখে রেখেছিলেন ফুটবল ইশ্বর। সমর্থকদের কাছে নায়ক হয়ে ওঠা ফিরমিনো বিদায় নেবেন, অথচ তখনও নিশ্চিত ছিলেন না তার মাঠে নামে হবে কিনা। মাঠে নামলেও শোকার্ত হৃদয় স্বাভাবিকভাবে খেলতে পারবেন, তা নিয়েও দ্বন্দ্ব ছিল। বদলি খেলোয়াড় হিসেবে যখনই তিনি মাঠে পা রাখেন, ‘কাল্ট হিরো’কে নিয়ে বাধা গান ‘সি সিনর’ গাইতে শুরু করেন সমর্থকরা।

অবশ্য এদিন ম্যাচের শুরুর আবহও ছিল ফিরমিনোকে ঘিরেই। কিক-অফের বাঁশি বাজার আগেই সমর্থকরা কোরাস গাইতে থাকেন। তখন গ্যালারিতে ভেসে ওঠে ট্রফিতে ফিরমিনোর চুমু আঁকা ছবি, সুরে-সুর মিলিয়ে লিভারপুল সমর্থকরা গেয়ে উঠলেন গান, ‘ইউ উইল নেভার ওয়াক এলন।’ তবে নাটকীয়তা ধরে রাখলেন কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপও। তিনি একাদশ সাজান ফিরমিনোকে বেঞ্চে রেখে। তবে ম্যাচ শুরুর আগে এই ফরোয়ার্ডের এক ঝলক দেখা মেলে। চোখে-মুখে বিষণ্নতার লুকোচুরি খেলা চলছে তার।

লিভারপুলের রক্ষণে চাপ ধরে রেখে ২১ মিনিটে পেনাল্টি আদায় করে নেয় অ্যাস্টন ভিলা। সেই দফায় ব্যর্থ হলেও, ২৭তম মিনিটেই সফরকারীরা লিড পেয়ে যায়। দগলাস লুইসের ক্রসে ডাইভিং হেডে লিভারপুল গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকারকে পরাস্ত করেন জ্যাকব রামসি। স্বাগতিক সমর্থকদের স্তব্ধ করে দিয়ে নেচে ওঠে অ্যাস্টনের সমর্থকরা।

প্রথমার্ধে লিভারপুল চারটি আক্রমণ শাণালেও কোনোটিই লক্ষ্যে রাখতে পারেনি। অন্যদিকে চার শটের দুটি লক্ষ্যে রেখে একটি থেকে গোল আদায় করে নেয় অ্যাস্টন ভিলা। দ্বিতীয়ার্ধে নেমেই ৯ ম্যাচ অপরাজিত লিভারপুল গোলের চেষ্টায় মরিয়া হয়ে ওঠে। তবে ৫১তম মিনিটে মোহামেদ সালাহর দূরের পোস্টে নেওয়া শট আটকান ভিলা গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। একটু পর কোডি গাকপো জালে বল জড়ালে ক্ষণিকের জন্য লিভারপুল শিবিরে স্বস্তি ফেরে, কিন্তু ভিএআরে অফসাইড ধরা পড়ায় তা উবে যায়।

এই মৌসুম শেষেই কয়েকজন ফুটবলার অ্যানফিল্ড ছাড়বেন। ফিরমিনোসহ চলতি মৌসুম শেষে লিভারপুল ছাড়ার অপেক্ষায় থাকা জেমস মিলনার মাঠে নামেন এই সময়। আক্রমণের ধার বাড়াতে ৭২তম মিনিটে একসঙ্গে তিনটি পরিবর্তন করেন লিভারপুল কোচ। এই মৌসুম শেষে দলছুট হবেন নাবি কেইতা ও অ্যালেক্স অক্সলেড-চেম্বারলেইনও।

তবে মনে হচ্ছিল ফিরমিনোর বিদায়টা আর রঙিন হচ্ছে না। কিন্তু চিত্রনাট্যটা ফিরমিনোকে নায়ক বানানোর জন্যই লিখে রাখা হয়েছিল! ৮৯ মিনিটে মোহামেদ সালাহর দুর্দান্ত এক পাস থেকে লিভারপুলকে সমতায় ফেরানো গোলটি করেন ফিরমিনো। এ গোলের পর অ্যানফিল্ড আনন্দের বন্যায় ভেসে যায়। এ গোলে ফিরমিনোর বিদায় কিছুটা হলেও যেমন রঙিন হলো, তেমনি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার আশাটাও নিভু নিভু হলেও জ্বলতে থাকল লিভারপুলের।

চলতি মৌসুমে ৩৭ ম্যাচে ৬৬ পয়েন্ট নিয়ে লিভারপুল আছে পঞ্চম স্থানে। যথাক্রমে তাদের সামনে রয়েছে নিউক্যাসল ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। পরের ২ ম্যাচ থেকে একটি করে পয়েন্ট পেলেই তাদের আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলা নিশ্চিত হয়ে যাবে। আর এই দু’দল নিজেদের দুই ম্যাচেই হারলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার সুযোগ তৈরি হবে লিভারপুলের।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com