লাইফস্টাইল ডেস্ক: অসুস্থতা জীবনের অংশ। একথা বোধহয় ধ্রুব সত্য। শরীর থাকলে অসুখ-বিসুখ থাকবেই। কিন্তু এমন কিছু রোগ রয়েছে যেগুলোর লক্ষণ দেখা যায় না। এসব রোগ নীরব ঘাতক হিসেবে পরিচিত। নীরবেই শরীরের ক্ষতি করে এরা।
কম উপসর্গযুক্ত এসব রোগের চিকিৎসা সঠিক সময়ে না হলে তা মারাত্মক হতে পারে। এমন কিছু রোগ রয়েছে যাতে বিশেষত নারীরা আক্রান্ত হয়ে থাকেন। চলুন রোগগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই-
রক্তাল্পতা
দক্ষিণ এশিয়ার নারীদের মধ্যে রক্তাল্পতা বা আয়রনের ঘাটতি খুব বেশি দেখা যায়। রক্তে যথেষ্ট পরিমাণ লোহিত কণিকার অভাব থাকলে এই রোগ হয়। এর কিছু লক্ষণ হলো চরম ক্লান্তি, ফ্যাকাসে ত্বক, মাথাব্যথা, বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, দুর্বলতা, ভঙ্গুর নখ, ক্ষুধামান্দ্য বা অস্বাভাবিক লালার মতো সমস্যা দেখা দেওয়া। ঘন ঘন রক্ত দান করলে, নিরামিষ খাবার খেলে এই রোগ হতে পারে। নারীদের মাসিক ও গর্ভাবস্থায় রক্তের ক্ষয় হওয়ার কারণে রক্তাল্পতার ঝুঁকি বেশি থাকে।
এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যেমন এপ্রিকট, আয়রনযুক্ত শস্য, মটরশুঁটি, সামুদ্রিক খাবার, মুরগির মাংস খেতে হবে। এতে রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করা যায়। ভিটামিন সি-ও খুব জরুরি। দরকার হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
স্লিপ অ্যাপনিয়া
এই রোগে হলে ঘুমের মধ্যে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসার মতো সমস্যা হতে পারে। নারীদের এই রোগ হলে সকালের মাথাব্যথা, বিরক্তি, ঘুমের হাঁপানি, জোরে নাক ডাকা বা দিনের বেলা অতিরিক্ত ঘুম ঘুম ভাব হতে পারে। যাদের অতিরিক্ত ওজন রয়েছে বা মেনোপজের সময় এই সমস্যা হতে পারে।
স্লিপ অ্যাপনিয়া হলে দেহে অক্সিজেনের মাত্রা হঠাৎ কমে গিয়ে কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমে চাপ তৈরি করতে পারে। এতে ইনসুলিনের সমস্যা এবং বিপাকীয় জটিলতা তৈরি হতে পারে।
ডিম্বাশয়ের ক্যানসার
ওভারিয়ান ক্যানসার বলতে আসলে ডিম্বাশয়ে কোষের দ্রুত বৃদ্ধিকে বোঝায়। প্রতি বছর অসংখ্য নারী এই রোগে আক্রান্ত হন। যতক্ষণ না ক্যানসার পেলভিস বা পেটের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে, ততক্ষণ এটি উপলব্ধি করা প্রায় সম্ভবই হয় না। কারণ এই স্বাস্থ্য সমস্যার প্রাথমিক কোনো উপসর্গ থাকে না।
ডিম্বাশয়ের ক্যানসারের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে ক্লান্তি, পিঠে ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য, ঘন ঘন প্রস্রাব, পেট ফাঁপা বা ফোলাভাব এবং দ্রুত ওজন হ্রাস। বয়স্ক, অতিরিক্ত ওজন, সন্তানহীনতা, এন্ডোমেট্রিওসিসে আক্রান্ত হওয়া নারীদের মধ্যে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সমস্যা বেশি থাকে। পারিবারিক ইতিহাসও ওভারিয়ান ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।
উচ্চ রক্তচাপ
উচ্চ রক্তচাপ হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এবং অন্যান্য হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা ও প্রতিরোধের মধ্যে রয়েছে ধূমপান না করা, নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া। ৫০ বছর বয়সের পরে নারীদের উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
নিজের শরীর নিয়ে সচেতন থাকুন। এসব রোগের কোনো লক্ষণ দেখামাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।