বিপৎসীমার ওপরে যমুনার পানি

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৮ জুন, ২০২২

ঢাকা : উজান থেকে নেমা আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এর প্রভাব পড়েছে যমুনায়। এতে যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করেছে। জেলার কাজিপুর পয়েন্টে যমুনার পানি বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা পানি শহর রক্ষা বাঁধ এলাকায় আরও ৪২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার মাত্র ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বন্যার আশঙ্কা করছেন নদী পাড়ের মানুষ।

শনিবার (১৮ জুন) সকাল পৌনে ৮টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন ও সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক হাসানুর রহমান।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন সকালে জানান, জেলার কাজিপুর পয়েন্টে গত ১২ ঘণ্টায় (সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা) ৮ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ (১৮ জুন) সকাল ৬টায় জেলার কাজিপুর পয়েন্টে যমুনার পানির স্তর রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ২৬ মিটার। আর এখানে পানির বিপৎসীমার স্তর ধরা হয় ১৫ দশমিক ২৫ মিটার।

এদিকে পানি বৃদ্ধির ফলে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতেও পানি বাড়ছে। এতে ধীরে ধীরে প্লাবিত হচ্ছে যমুনার চর ও নিম্নাঞ্চল। অপরদিকে, পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের মানুষের মাঝে বন্যা ও ভাঙণ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। এসব এলাকায় পানিতে ডুবে নষ্ট হচ্ছে নানা রকমের ফসল। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন।

শনিবার (১৮ জুন) সকালে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক হাসানুর রহমান জানান, সকালে শহরের হার্ড পয়েন্ট এলাকায় পানির স্তর রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৩১ মিটার। আর এখানে বিপৎসীমা ধরা হয় ১৩ দশমিক ৩৫ মিটার।

গত ২৪ ঘণ্টায় (১৮ জুন সকাল ৬টা পর্যন্ত) যমুনা নদীর পানি ৪২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে বিপৎসীমার মাত্র ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে যমুনায় আরও কয়েকদিন পানি বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে সিরাজগঞ্জে বন্যা হতে পারে বলেও জানান তিনি।

প্রায় দশদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের নিচু জমিগুলো তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধির ফলে যমুনার পাশাপাশি ফুলজোড়, করতোয়া, বড়াল, হুড়াসগর, ইছামতীসহ চলনবিলের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি প্লাবিত হওয়ায় কাঁচা পাট, তিল, কাউন, বাদাম, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের উঠতি ফসল নষ্ট হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষকেরা।

অপরদিকে, যমুনার পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার কাজিপুর, চৌহালী, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুরের চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com