আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারত মহাসাগরে অবস্থিত দ্বীপদেশ শ্রীলঙ্কা। পর্যটন নির্ভর দেশটি স্বাধীন হওয়ার পর সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকট পার করছে। সংকট মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভ দমনে প্রথমে জরুরি অবস্থা, পরে কারফিউ জারি করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। বন্ধ করে দেওয়া হয় ফেসবুক, টুইটারও। এর মধ্যেই এবার একযোগে পদত্যাগ করেছেন দেশটির ২৬ জন মন্ত্রী।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, তীব্র অর্থনৈতিক সংকট ও চলমান বিক্ষোভের মুখে রবিবার (৩ এপ্রিল) রাতে মন্ত্রিসভার ২৬ জন সদস্য তাদের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। বিষয়টি জানিয়েছেন দেশটির শিক্ষামন্ত্রী। তবে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে এবং প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে এখনো নিজ পদে বহাল রয়েছেন। যদিও এর আগে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করছেন বলে গুঞ্জন উঠেছিল। পরে এই খবর ভিত্তিহীন বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
এদিকে, জরুরি অবস্থার মধ্যেও শ্রীলঙ্কায় অব্যাহত রয়েছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ। রবিবারও (৩ এপ্রিল) রাস্তায় নামেন শত শত মানুষ। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে নিরাপত্তাবাহিনী। এদিন কারফিউ লঙ্ঘনের অভিযোগে রাজধানী কলম্বোসহ বিভিন্ন শহর থেকে কয়েকশ বিক্ষোভকারীকে আটক করে পুলিশ।
এ সময় বিক্ষোভ দমনে টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে পুলিশ। এরপরও সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বিক্ষোভকারীরা বলছেন, টিয়ার গ্যাস, জলকামান কিংবা গুলি করে তাদের দমানো যাবে না।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক নারী জানালেন, গোতাবায়া সরকার দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় রয়েছে। অথচ তেমন কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। দেশের পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।
রবিবার (৩ এপ্রিল) রাজধানী কলম্বোসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ সমাবেশও করেন সাধারণ মানুষ। সেসব জায়গায়ও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের পাশাপাশি চলে ব্যাপক ধরপাকড়।
চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে ‘গোতাবায়া গো হোম’ স্লোগানে বিক্ষোভ করেন বিরোধী দলের নেতাকর্মীরাও। একপর্যায়ে তাদেরও বাধা দেয় নিরাপত্তা বাহিনী। তবে বিরোধীরা বলছেন, এই আন্দোলন সাধারণ মানুষের। কারফিউ কিংবা জরুরি অবস্থা জারি করে এই আন্দোলন থামানো যাবে না। তা জানান দিতেই তারা রাস্তায়।