আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়ার আলোচিত টিভি সাংবাদিক মারিনা ওভসিয়ানিকোভা বলেছেন, তিনি আরো মামলার ঝুঁকিতে থাকা সত্ত্বেও ফ্রান্সে আশ্রয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম চ্যানেল ওয়ানের সম্পাদক মারিনা গত সোমবার রাতের প্রধান সংবাদ সম্প্রচারের সময় সংবাদ পাঠকের পাশে দাঁড়িয়ে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড তুলে ধরেন।
মারিনা ওভসিয়ানিকোভা বলেছেন, তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু ফ্রান্সে আশ্রয়ের প্রস্তাব গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
রুশ সরকারি চ্যানেলে সংবাদ প্রচারের সময় ‘যুদ্ধ নয়’ এবং ‘এরা আপনাদের কাছে মিথ্যা বলছে’ লেখা প্ল্যাকার্ড তুলে ধরেছিলেন মারিয়া। এজন্য তাঁকে আটক করে ১১ ঘণ্টা জেরা করা হয়। আলোচিত এ সাংবাদিক বলেছেন, তিনি নিজে থেকেই প্রতিবাদটি করেছিলেন একথা জেরাকারীরা বিশ্বাস করেননি।
মারিনা ওভসিয়ানিকোভাকে তৎক্ষণাৎ ৩০ হাজার রুবল (২৯০ ডলার) জরিমানা করা হয়েছে।
ফ্রান্স ২৪ চ্যানেলের সঙ্গে কথা বলার সময় মারিনা বলেন, তিনি চ্যানেল ওয়ান থেকে পদত্যাগের জন্য ‘সব কাগজপত্র জমা দিয়েছেন।
দুটি ছোট সন্তানের মা ওভসিয়ানিকোভা বলেছেন, তিনি তার আলোচিত কাজের মাধ্যমে নিজের ‘পরিবারের জীবন ভেঙে দিয়েছেন’। বিশেষ করে তার ছেলে খুব উদ্বিগ্ন।
‘কিন্তু আমাদের এই ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধের অবসান ঘটাতে হবে যাতে এই উন্মাদনা পারমাণবিক যুদ্ধে পরিণত না হয়। আশা করি আমার ছেলে যখন বড় হবে তখন সে বুঝতে পারবে কেন আমি এটা করেছি,’ বলেন মারিনা। তিনি আরো জানান, তার কিছু সহকর্মী পদত্যাগ করেছেন কিন্তু অনেকেই আর্থিক সমস্যার কারণে তা করতে পারেননি।
জার্মানির পত্রিকা ডের স্পিগেলের সঙ্গে এক পৃথক সাক্ষাৎকারে ওভসিয়ানিকোভা বলেছেন, তিনি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর দেওয়া আশ্রয়ের প্রস্তাব গ্রহণ না করে রাশিয়াতেই থাকবেন।
‘আমি আমাদের দেশ ছেড়ে যেতে চাই না। আমি একজন দেশপ্রেমিক। আমার ছেলে আরো বেশি। আমরা কোনোভাবেই দেশ ছাড়তে চাই না, আমরা কোথাও যেতে চাই না। ’
এখন জরিমানা দিয়ে মুক্ত হওয়া সত্ত্বেও মারিনা আরো মামলার মুখোমুখি হতে পারেন। ৪ মার্চ অনুমোদিত কঠোর নতুন আইনে তার কারাদণ্ড হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।