থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালত দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেয়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে তার পদ থেকে স্থায়ীভাবে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে তাকে এ সাজা দেওয়া হচ্ছে বলে শুক্রবার আদালত তার রায়ে বলেছে।
কম্বোডিয়ার নেতা হুন সেনের সঙ্গে এক ফোনালাপকে কেন্দ্র করে হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে এ রায় থাইল্যান্ডের সিনাওয়াত্রা পরিবারের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে; এটি দেশটিতে নতুন রাজনৈতিক অস্থিরতার সূচনা করতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর মাধ্যমে থাইল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া পেতংতার্ন তার মেয়াদের মাত্র এক বছর কাটানোর পরই ক্ষমতাচ্যুত হলেন, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
শুক্রবারের রায়ে থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালত বলেছে, জুনে ফাঁস হওয়া ফোনালাপে পেতংতার্নের নৈতিকতা ভঙ্গের প্রমাণ পাওয়া গেছে। সীমান্ত ঘিরে সশস্ত্র সংঘাতের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাওয়ার পর কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে ফোনালাপে পেতংতার্নকে নতজানু মনে হয়েছে, ভাষ্য বিচারকদের।
দুই দেশ কয়েক সপ্তাহ পর সত্যি সত্যিই সংঘাতে লিপ্ত হয়, যা ৫ দিন চলে।
৩৯ বছর বয়সী পেতংতার্নকে এর আগে অস্থায়ীভাবে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার স্থায়ীভাবে তার পদ চলে যাওয়ায় এখন থাইল্যান্ডের পার্লামেন্টকে নতুন প্রধানমন্ত্রীর খোঁজে নামতে হবে। পেতংতার্নের দল ফেউ থাই পার্টির জন্য এ যাত্রায় মিত্রদের সমর্থন জোগাড় করা বেশ কষ্টসাধ্যই হওয়ার কথা।
নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার আগ পর্যন্ত উপপ্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই ও মন্ত্রিসভার বাকি সদস্যরা সরকার চালাবেন।
আপাতত ৫ জনকে পেতংতার্নের উত্তরসূরী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। তার মধ্যে আছে ফেউ থাইয়ের ৭৭ বছর বয়সী চাইকাসেম নিতিসিরি। সাবেক এ অ্যাটর্নি জেনারেলের মন্ত্রিসভা অভিজ্ঞতা সীমিত এবং তাকে রাজনীতিতে খুব বেশি সক্রিয়ও কখনো দেখা যায়নি।
এর বাইরে নাম আছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচার। ২০১৪ সালে ফেউ থাইয়ের সরকারকে উৎখাত করে তার নেতৃত্বেই সামরিক বাহিনী ক্ষমতা নিয়েছিল, তিনি কিছুদিন আগে রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছিলেন।
আরেক সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী আনুতিন চার্নভিরাকুল। ফোনালাপ ফাঁসকে কেন্দ্র করে পেতংতার্নের জোট সরকার থেকে তার দল নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি উপপ্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।
“নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া কঠিন হবে, এবং বেশ সময় লেগে যেতে পারে। সব পক্ষের স্বার্থ এক করা সহজ নয়, ফেউ থাই-ই সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় থাকবে,” বলেছেন চুলালংকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী স্টিথর্ন থানানিথিচট।