কলম্বিয়ায় পুলিশের একটি হেলিকপ্টারে ড্রোন হামলা এবং সামরিক বিমানঘাঁটির কাছে শক্তিশালী বিস্ফোরণে অন্তত ১৭ জন নিহত ও ৫৮ জন আহত হয়েছেন। দেশটির কর্তৃপক্ষ এ ঘটনাগুলোকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
বৃহস্পতিবার (স্থানীয় সময়) দুটি পৃথক স্থানে এসব হামলার ঘটনা ঘটে। যদিও হামলাগুলোর মধ্যে কোনো যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সিএনএনের খবরে বলা হয়, অ্যান্টিওকিয়া প্রদেশে মাদকবিরোধী অভিযানে অংশ নেওয়া জাতীয় পুলিশের একটি হেলিকপ্টার ড্রোন হামলার শিকার হয়। এতে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয় এবং দুজন পুলিশ সদস্য আহত হন।
প্রদেশের গভর্নর আন্দ্রেস জুলিয়ান রেন্ডন সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন, যেখানে দেখা যায়, হেলিকপ্টারটি পাহাড়ে আছড়ে পড়ছে।
কলম্বিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী পেদ্রো আর্নুলফো সানচেজ জানান, এই হামলার জন্য দায়ী ‘ইস্টাডো মেয়র সেন্ট্রাল (ইএমসি)’ নামে ফার্ক বিদ্রোহী গোষ্ঠী থেকে বেরিয়ে আসা একটি সশস্ত্র গ্রুপের ৩৬তম ফ্রন্ট।
একই দিনে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কালি’র মার্কো ফিদেল সুয়ারেজ সামরিক বিমানঘাঁটির কাছে ঘটে আরেকটি ভয়াবহ বিস্ফোরণ। এতে ছয়জন নিহত এবং কমপক্ষে ৫০ জন আহত হন।
কলম্বিয়ার বিমানবাহিনী একে ‘সন্ত্রাসী গাড়িবোমা হামলা’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। স্থানীয় প্রশাসনের তথ্যমতে, শহরের প্রবেশ ও বাহির পথে কড়া নিরাপত্তা জারি করা হয়েছে।
কালি শহরের মেয়র আলেহান্দ্রো এদার জানান, আহতদের দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং হামলার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। জড়িতদের তথ্য দিলে ৪০০ মিলিয়ন পেসো (প্রায় এক লাখ মার্কিন ডলার) পুরস্কার দেওয়া হবে।
প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো প্রাথমিকভাবে ‘গালফ ক্ল্যান’ নামের একটি শক্তিশালী অপরাধী গোষ্ঠীকে সন্দেহ করলেও পরবর্তীতে হামলার পেছনে ফার্ক বিদ্রোহীদেরই দায় দেখান।
জাতীয় পুলিশের মহাপরিচালক কার্লোস ফের্নান্দো ত্রিয়ানা বেলত্রান হামলাগুলোকে ‘সন্ত্রাসী তৎপরতা’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে জানান, আহতদের চিকিৎসা চলছে।
এর আগে, চলতি বছরের জুন মাসেও কালি ও কউকা অঞ্চলে একাধিক হামলায় সাতজন নিহত এবং ২৮ জন আহত হয়েছিলেন। সে সময় কর্মকর্তারা জানান, ২০২২ সালে এক ফার্ক নেতার মৃত্যুর প্রতিশোধ হিসেবেই এসব হামলা চালানো হয়েছিল।
কলম্বিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও মাদক চক্রের সহিংসতা বন্ধে সরকারের চ্যালেঞ্জ দিন দিন বাড়ছে।