ঢাকা : গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান কয়েকদিন আগে ‘প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময়েই নির্বাচন হবে’ বলে ‘শতভাগ গ্যারান্টি’ দিয়েছিলেন । এর পর বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আরেক দফা প্রশংসা করেন ড. ইইনূসের। বলেন, “ষড়যন্ত্র হলেও ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে যথাসময়ে নির্বাচন হবে। হাসিনার বিচার যদি না হয়, তাহলে কিসের বিচার করবেন? এটা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের ওয়াদা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তিনি (ড. ইউনূস) কারো ফাঁদে পড়ে ওয়াদা ভঙ্গ করবেন না। বরং রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত অযথা সময় নষ্ট না করে মাঠঘাট, গ্রামগঞ্জে গিয়ে গণমানুষের কাছে নিজের দলের লক্ষ্য উদ্দেশ্য তুলে ধরে জনগণের ম্যানডেট আদায়ের চেষ্টা করা।”
কিন্তু এবার তিনি ‘একহাত নিলেন’ ড. ইউনূসের। সমালোচনা করলেন তার ‘মিষ্টি কথার’। ‘ইন্টার্ন উপদেষ্টাদের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার সার্জারি করাতে গিয়ে তিনি রাষ্ট্রের পুরো অঙ্গে ক্যান্সারের মতো ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা ছড়িয়ে ফেলেছেন’ বলেও মন্তব্য করেন রাশেদ খান।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকাল ৯টা ৪৪ মিনিটে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে ‘ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের মিষ্টি কথায় গদগদ হয়ে পড়ার সুযোগ কতটুকু আছে’ এমন প্রশ্ন তোলেন রাশেদ খান। বলেন, “আমরা বিচার ও সংস্কারের কথা শুনলে খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়ি! এই বুঝি হাসিনাকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে গণহত্যার বিচার সম্পন্ন হয়ে গেল! আমরা মনে করি সংস্কারের মাধ্যমে সব ঠিকঠাক করে ফেলবে! কিন্তু কথায় আছে না ‘সময় গেলে সাধন হবে না’! ঠিক ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষেত্রে সেটিই হয়েছে। তিনি সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করতে পারেননি। এর অন্যতম কারণ হলো তার ভুল টিম সিলেকশন (সমালোচনার পরেও তিনি এই উপদেষ্টা পরিষদের পুনর্গঠনের উদ্যোগও নেননি!)”
ড. ইউনূস ফ্রান্স থেকে ফিরে এসে যাদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেছেন তাদের ইন্টার্ন চিকিৎসকের মতো’ বলে অভিহিত করেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক। বলেন, “তাদের মাধ্যমে তিনি ১৬ বছর ধরে তৈরি হওয়া হাসিনার ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার (ক্যান্সার) চিকিৎসা করাতে চান! ইন্টার্ন উপদেষ্টাদের মাধ্যমে এই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার সার্জারি করাতে গিয়ে তিনি রাষ্ট্রের পুরো অঙ্গে ক্যান্সারের মতো ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা ছড়িয়ে ফেলেছেন বা বহাল রেখেছেন। যার ফলাফল; সচিবালয়ে, পুলিশে, র্যাবে, বিজিবিতে, সকল দপ্তর ও সেক্টর আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সেটাপ বহাল তো রয়েছেই বরং অনেকাংশে শক্তিশালীও হয়েছে।”
রাশেদ খান বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের পরে প্রথম দায়িত্ব ছিল আওয়ামী সুবিধাভোগীদের, যারা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ফ্যাসিবাদী কাঠামো সৃষ্টির দায়িত্ব পালন করেছে, তাদের চাকরিচ্যুত করা, শাস্তির মুখোমুখি করা। কিন্তু ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস সেই আগের আওয়ামী সেটাপেই দেশ চালাচ্ছেন। সুতরাং বিচার ও সংস্কারের মিষ্টি কথা যে তারা বলেন, সেটি আমার কাছে অবিশ্বাস্য লাগে। উপদেষ্টা পরিষদের এনজিও সার্কেলটা মিষ্টি কথায় পটু, কিন্তু বাস্তবায়নে তারা কার্যত উদাসীন ও অনভিজ্ঞ! যেকারণে বছর শেষেও মিষ্টি কথার মিষ্টি ধোঁকায় আমরা নতুন স্বপ্ন দেখছি! মূলত আমাদের ভাগ্যই খারাপ। বারবার পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখে আমাদের যোদ্ধারা জীবন দেয়, তবুও রাষ্ট্রের গুণগত ও পদ্ধতিগত পরিবর্তন হয় না!”