শিরোনাম
দেবকে কখনো ক্ষমা চাইতে হবে না : রুক্মিণী মালয়েশিয়ার বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হলো ৯৮ বাংলাদেশিকে শেখ হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ গাড়িচালকের প্লট বরাদ্দ বাতিল অনেক কম খরচে সিঙ্গাপুরে স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার সুযোগ, সময় লাগবে ৪-৬ মাস বৈধ না হলে নির্বাচনের কোনো মানে নেই : ড. ইউনূস রাষ্ট্রের পুরো অঙ্গে ক্যান্সারের মতো ফ্যাসিবাদ ছড়িয়েছেন ড. ইউনূস: রাশেদ খান ব্যাটে–বলে বিবর্ণ সাকিব, হারে সিপিএল শুরু অ্যান্টিগার মোহাম্মদপুরের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী বুনিয়া সোহেলের আস্তানায় যৌথ বাহিনীর অভিযান সিন্ডিকেটের বাধায় ৪০ মিনিট আটকা অ্যাম্বুলেন্স, প্রাণ গেল নবজাতকের এক বছরে বিএনপিসহ ভিন্নমত পোষণকারীদের দেড় লাখ ফোনকল রেকর্ড করে আ.লীগ সরকার

সিন্ডিকেটের বাধায় ৪০ মিনিট আটকা অ্যাম্বুলেন্স, প্রাণ গেল নবজাতকের

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৫ আগস্ট, ২০২৫

শরীয়তপুরের স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের কারণে ঢাকা বা অন্য কোনো জেলার অ্যাম্বুলেন্স শরীয়তপুর থেকে রোগীদের সেবা দিতে পারেন না। এই সিন্ডিকেটের বাধায় ঢাকায় নেওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সে প্রায় ৪০ মিনিট আটকে থেকে এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে শরীয়তপুর পৌর এলাকার নিউ মেট্রো ক্লিনিকের সামনে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও নিহত শিশুর পরিবার জানায়, ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর এলাকার নূর হোসেন সরদারের স্ত্রী রুমা বেগম প্রসব বেদনায় দুপুরে নিউ মেট্রো ক্লিনিকে ভর্তি হন। সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। জন্মের পর থেকেই নবজাতক শ্বাসকষ্ট ও ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় ভুগতে থাকে। চিকিৎসক জরুরি ভিত্তিতে তাকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন। শিশুটির পরিবার তাৎক্ষণিকভাবে একটি ঢাকাগামী অ্যাম্বুলেন্স পাঁচ হাজার টাকায় ভাড়া করে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু ক্লিনিকের সামনেই স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্স চালক সবুজ দেওয়ান ও আবু তাহের দেওয়ান গাড়ির গতিরোধ করে। মূলত তারা নিজেদের সিন্ডিকেটভুক্ত অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া অন্য কোনো গাড়িকে ঢাকায় যেতে দিতে রাজি ছিলেন না। এসময় ঢাকাগামী অ্যাম্বুলেন্স চালক মো. মোশারফ মিয়ার কাছ থেকে জোরপূর্বক চাবি কেড়ে নেওয়া হয় এবং তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। রোগীর স্বজনদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ায় প্রায় ৪০ মিনিট অ্যাম্বুলেন্সে আটকে থাকার পর নবজাতক মারা যায়। ঘটনার পর অভিযুক্ত দুই চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে শরীয়তপুরে একটি অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে, যারা বাইরের গাড়িকে রোগী বহনে বাধা দেয় এবং জোরপূর্বক যাত্রী নিজেদের গাড়িতে তুলতে বাধ্য করে। এ ধরনের বর্বরতা বন্ধ না হলে আরও প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন তারা।

অ্যাম্বুলেন্সটির চালক মো. মোশারফ মিয়া বলেন, আমি ঢাকা থেকে আশা ট্রিপ নামিয়ে দিয়ে মেডিকেলের সামনে এসে গাড়িটা সাইড করি। এর মধ্যে রফিক ভাই ফোন দিয়ে ট্রিপ দেয়। আমি তখন রোগীদের নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা শুরু করলে স্থানীয় কিছু অ্যাম্বুলেন্স চালক এসে আমার গাড়ির গতিরোধ করে এবং বলেন তুমি এই ট্রিপ নিতে পারবে না। আমি তাদেরকে বললাম ভাই আপনাদের ঝামেলা থাকলে রোগীকে নামিয়ে নিন কিন্তু রোগীর অবস্থা সিরিয়াস দ্রুত ঢাকা নিতে হবে। রোগীর স্বজনরা বলল না আমরা এই গাড়িতে যাব। তখন আমি গাড়ি স্টার্ট করলে তারা আমার গাড়ি বন্ধ করে চাবি নিয়ে যায় এবং আমার গায়ে হাত দেয়। এরপর ৪০ মিনিট আটকা থাকার পর নবজাতকটি গাড়িতে মারা যায়।

নিহত শিশুর নানী সেফালী বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার নাতিকে ঢাকায় নিতে পারলেও বাঁচত। ওরা আমার নাতিকে বাঁচতে দেয়নি।

স্বজন রানু আক্তার বলেন, অনেক অনুরোধ করেছিলাম গাড়ি ছেড়ে দিতে, কিন্তু তারা শোনেনি। সিন্ডিকেটের জন্যই আমাদের বাচ্চাটি মারা গেছে।

পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com