বর্ষাজুড়ে তুলনামূলকভাবে সহনীয় ছিল ঢাকার বাতাস। আজও রাজধানীর বায়ুমান রয়েছে সহনীয় পর্যায়ে। তবে, সোমবারের তুলনায় মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বায়ুমানে সামান্য অবনতি হয়েছে।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার ঢাকার বায়ুমান সূচক (একিউআই) ৬০। এতে সহনীয় অবস্থানে থেকে দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ৪৯তম। সোমবার সূচক ছিল ৫৫ এবং অবস্থান ৬০তম।
এদিকে বায়ুদূষণের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ। সাধারণত দূষণের তালিকার শীর্ষ পাঁচে থাকলেও এক নম্বরে খুব কম দেখা যায় শহরটিকে। আজ রিয়াদের বায়ুমান সূচক দাঁড়িয়েছে ২৩৬, যা ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ের বাতাসের নির্দেশক।
আজ বায়ুদূষণে শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো- জেরুসালেম, ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা, ইরাকের বাগদাদ ও উগান্ডার কাম্পালা। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ১৯০, ১৮১, ১৭৬ ও ১৫৫। সব কটি শহরের বাতাস আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রয়েছে।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ-এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদরোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল প্রকাশিত এক সমীক্ষায় দেখা যায়, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সৃষ্ট বায়ুদূষণে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী মারা যায় ৫২ লাখ মানুষ। আর ডব্লিউএইচও বলছে, গৃহস্থালি ও পরিবেশগত বায়ুদূষণে বছরে মৃত্যু হয় ৬৭ লাখ মানুষের।
দূষণ নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়া ও বাইরে বের হলে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে। পাশাপাশি ইটভাটা ও শিল্পকারখানা থেকে ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণ, কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া নির্গতকারী যানবাহন রাস্তায় না নামানোর নির্দেশনা দিয়েছে।