ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন গণভবনকে জুলাই অভ্যুত্থানের জাদুঘর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ সিদ্ধান্ত নেয় পরিষদ। পরে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
তিনি বলেন, ‘গণভবনকে জুলাই অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে। আর সেখানে জনগণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।’
আফিস আরও বলেন, সম্পূর্ণ বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসনের কোনো সুযোগ নেই। দলের বিচার হবে নাকি ব্যক্তির বিচার হবে, এ বিষয়ে আইন বিভাগ ও বিচার বিভাগের সহায়তা নেয়া হবে।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়ে কেবিনেটের পক্ষ থেকে অভিনন্দন প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের তালিকা হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে সম্মেলন করবেন। আর আহতদের লংটার্ম চিকিৎসার ব্যবস্থাও সরকার নেবে।’
বন্যাদুর্গত এলাকা নিয়ে আসিফ বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত হয়েছে। প্রতিটি পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য শীঘ্রই কার্যক্রম শুরু হবে।’
শিল্প কারখানায় উত্তেজনার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে কেবিনেটে আলোচনা হয়েছে। শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য রিভিউ কমিটি করা হয়েছে। মালিক ও শ্রমিকের পক্ষ থেকে এই কমিটি হবে।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের একমাত্র প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন ছিল ‘গণভবন’। এর আগে কোনো প্রধানমন্ত্রী শেরেবাংলা নগরের এই বাসভবনে থাকেননি। ১৯৭৪ সালে নির্মাণ শেষে সেখানে অফিস করতেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর গণভবনকে পরিণত করা হয় সামরিক আদালতে। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে অফিস করতেন বঙ্গভবনে। আর বসবাস করতেন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে।
এইচএম এরশাদ সামরিক শাসক এবং প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্যান্টনমেন্টে বসবাস করতেন। তবে তার আমলে তেজগাঁওয়ে সাবেক সংসদ ভবনকে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে পরিণত করা হয়।
বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হয়ে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়কে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রূপান্তর করেন। তিনি এখানে অফিস শুরু করেন। তবে খালেদা জিয়া বসবাস করতে থাকেন ক্যান্টনমেন্টে। এভাবে অতীতের ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গণভবনে বাস করা একমাত্র প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন শেখ হাসিনা।