ইউরোপ-আমেরিকার সুর বদল, চাপ বাড়ছে ইসরায়েলের ওপর

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০২৪

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের যুদ্ধ বন্ধে নিজেদের সুর বদল করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। একই সঙ্গে গাজায় দ্রুত যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে পশ্চিমা মিত্ররা।

আলজাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের তোলা একটি প্রস্তাবের ওপর শুক্রবার ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। অন্যদিকে গাজায় পাঁচ মাস ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধে মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

বিশ্ব অঙ্গনে ইসরায়েলের প্রধান মিত্র হলো যুক্তরাষ্ট্র। যুদ্ধের শুরুতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার যুদ্ধবিষয়ক নীতিতে একতরফা সমর্থন দিলেও সে অবস্থান থেকে ধীরে ধীরে সরে আসছে ওয়াশিংটন। নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন খসড়া প্রস্তাব তার সবশেষ প্রমাণ।

যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া প্রস্তাবে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা ও মানবিক ত্রাণসহায়তা দিতে তাৎক্ষণিক ও টেকসই যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা অপরিহার্য হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলিদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি সেখানে রয়েছে।

তবে এতদিন গাজায় যুদ্ধবিরতির কথা এড়িয়ে যাচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি জাতিসংঘের এই ধরনের প্রস্তাবে ভেটো পর্যন্ত দিয়েছে দেশটি। সবশেষ গত ফেব্রুয়ারি মাসে ভেটো দিয়েছে ইসরায়েলি মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। তবে এখন সেই সুর পরিবর্তন করে যুদ্ধবিরতির কথা বলছে তারা।

অন্যদিকে ব্রাসেলসে ইইউ নেতারা মিলিত হয়ে গাজায় অবিলম্বে মানবিক ও টেকসই যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তারা সব ইসরায়েলি বন্দিকে নিঃশর্ত মুক্তির দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এ ছাড়া দক্ষিণ গাজার রাফা শহরে স্থল অভিযান নিয়ে সামনে না এগিয়ে যেতে ইসরায়েলকে আহ্বান জানিয়েছে। এই রাফা শহরে ১০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি আশ্রয় গ্রহণ করেছেন।

ইইউ বলছে, ইসরায়েল নতুন করে হামলা চালালে ইতিমধ্যে গাজার বিপর্যয়কর মানবিক পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। জরুরি প্রয়োজনীয় মৌলিক পরিষেবা ও মানবিক ত্রাণসহায়তা ব্যবস্থার পথ রোধ হয়ে যাবে।

অবশ্য বর্তমানে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে নতুন একটি চুক্তি সম্পাদনে আলোচনা চলছে। এতে মধ্যস্থতা করছে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র। এবারের আলোচনার মূল লক্ষ্য গাজায় যুদ্ধবিরত এবং হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলিদের মুক্তি নিশ্চিত করা। এ ছাড়া এই চুক্তির আওতায় ইসরায়েলের কারাগারে আটক ফিলিস্তিনি বন্দিদেরও মুক্তি দেওয়া হবে।

গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাত দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে ১৩০ জনের মতো বন্দি আছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৩২ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com