‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধও উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি’

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৩

ঢাকা : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধও আমাদের প্রকল্পের উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি উল্লেখ করে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম. মফিদুর রহমান বলেছেন, আজ আমাদের অত্যন্ত খুশির দিন। স্বপ্ন বাস্তবায়নের দিন। তৃতীয় টার্মিনালের এ প্রকল্প শেষ করতে অনেক প্রতিবন্ধকতা, প্রতিকূলতা ও বৈরী পরিবেশ মোকাবিলা করতে হয়েছে।

শনিবার (৭ অক্টোবর) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশের বিনির্মাণের যে রূপকল্প, তারই অবিচ্ছেদ্য অংশ বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন অধ্যায়। প্রকল্পের দায়িত্ব প্রদানের সময় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া সব নির্দেশনা মেনেই এ প্রকল্প আমরা শেষ করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, পাঁচ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটারের এ টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি প্লেন রাখার অ্যাপ্রোন (প্লেন পার্ক করার জায়গা) করা হয়েছে। দুই লাখ ৩০ হাজার স্কয়ার মিটারের মডার্ন টার্মিনাল বিল্ডিংয়ের ভেতরে থাকবে পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য ও অত্যাধুনিক সব প্রযুক্তির ছোঁয়া।

২০১৭ সালের শাহজালালের ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটারের এই টার্মিনালের নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায়। সে সময় ব্যয় ধরা হয় ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শুরু হয় টার্মিনালের নির্মাণকাজ। তখন খরচ বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকার বেশি। খরচের বেশিরভাগ ঋণ হিসেবে দিচ্ছে জাপানের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা জাইকা। নির্মাণ প্রকল্পের কাজ করছে স্যামসাং গ্রুপের কনস্ট্রাকশন ইউনিট স্যামসাং কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ট্রেডিং (সিঅ্যান্ডটি) করপোরেশন।

এ ভবনটির নকশা করেছেন রোহানি বাহারিন। তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সিঙ্গাপুরের সিপিজি করপোরেশন প্রাইভেট লিমিটেডের স্থপতি। সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি, ভারত, ফিলিপাইন, চীন, ভিয়েতনাম, মালদ্বীপের ভেলানাসহ বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দরের নকশাও করেছেন তিনি।

তবে নান্দনিকতায় ঢাকার তৃতীয় টার্মিনাল ছাড়িয়ে গেছে থাইল্যান্ডের সুবর্ণভূমি ও তুরস্কের ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরকেও। বিমানবন্দরে এ টার্মিনাল ভবনে প্রথম পর্যায়ে ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ চালু করা হবে। পরবর্তী পর্যায়ে আরও ১৪টি বোর্ডেং ব্রিজ স্থাপন করা হবে। বহির্গমনে মোট ১১৫টি চেক ইন কাউন্টার থাকবে। এর মধ্যে ১৫টি থাকবে সেলফ সার্ভিস চেক ইন কাউন্টার। আগমনী লাউঞ্জে পাঁচটি স্বয়ংক্রিয় চেক ইন কাউন্টারসহ মোট ৫৯টি পাসপোর্ট চেক ইন কাউন্টার থাকবে। এ টার্মিনালটিতে কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল সেন্টার থাকবে, যা দিয়ে পুরো হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরটি মনিটরিং করা সম্ভব হবে। বর্তমানে বিমানবন্দরটিতে কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল সেন্টার সংক্রান্ত কোনো সুবিধা নেই।

এ ছাড়াও ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টারসহ মোট ৬৬টি ডিপার্চার ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকবে। তৃতীয় টার্মিনালের সঙ্গে মাল্টিলেভেল কার পার্কিং ভবন নির্মাণ করা হবে। সেখানে প্রায় ১ হাজার ২৫০টি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। তৃতীয় টার্মিনাল ভবনের ভেতরেই ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন আলাদা নির্ধারিত অংশ থাকবে। মুভিং ওয়াকার, এস্কেলেটর, এলিভেটর, ব্যাগেজ হ্যান্ডলিং সিস্টেম, সিকিউরিটি সিস্টেম, ইমিগ্রেশন সিস্টেমসহ সব আধুনিক ও অটোমেটেড সিস্টেম এখানে সংযুক্ত হতে যাচ্ছে।

শুধু তৃতীয় টার্মিনাল দিয়ে বছরে ১ কোটি ৪০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। এ ছাড়া এই টার্মিনালের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। যাত্রীদের যাতায়াতের জন্য আশকোনার হজক্যাম্প থেকে একটি টানেলের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। অচিরেই এর কাজ শুরু করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com