ঢাকা : সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে না দিয়ে ‘সরকার মেরে ফেলার চক্রান্ত করছে’ বলে অভিযোগ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে বগুড়া হাটখোলা মাঠে ‘তারুণ্যের রোডমার্চ’ শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এই অভিযোগ করে তিনি বলেন, দেশের জনপ্রিয় নেত্রী যিনি গণতন্ত্রের জন্য সারাটা জীবন সংগ্রাম করছেন সেই নেত্রীকে আজকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাবন্দি করে তাকে হাসপাতালে আজকে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়তে হচ্ছে। তার চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা করছে না।
ডাক্তাররা বলেছেন যে, তাকে বাঁচতে হলে তার লিভার ট্রান্সপারেন্ট করা দরকার এবং সেটা বিদেশ ছাড়া সম্ভব নয়। বারবার বলা হয়েছে সরকারকে। পরিবার থেকে বলা হয়েছে, আমরা বলেছি। কিন্তু তিনি (শেখ হাসিনা) শুনতে রাজি নন। সাঈদী (দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী) সাহেবকে যেভাবে জেলে ঢুকিয়ে হাসপাতালে নিয়ে মেরেছে, দেশনেত্রীকে নিয়েও একই উদ্দেশ্যে করছে তারা।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে পরিষ্কার করে বলতে চাই, অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা করেন। তা না হলে সকল দায়দায়িত্ব আপনাদের নিতে হবে।
বিরোধী দল যাতে নির্বাচনে না আসতে পারে সে জন্য আবার নতুন করে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার অভিযোগও করেন বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, আমাদের কথা পরিষ্কার, এখন এক দফা এক দাবি… পদত্যাগ করো, সংসদ করো, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করো। আজকে সমগ্র বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো এক হয়েছে। আসুন জনগণকে নিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারকে তাকে সরিয়ে আমরা সত্যিকার অর্থে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি। আজকের এই সমাবেশ থেকে এই বার্তা বাংলাদেশের জনগণকে দিতে চাই, আসুন জেগে উঠুন, পরাজিত করুন এদেরকে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করুন। ‘চুরি তো করো, আবার বলো দাম ফিক্সড করে দিয়েছি’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এখন চালের দাম কত? ৭০/৮০ টাকা তাই না। কত খাওয়াবে বলছিল? ১০টাকা। পেয়েছেন। না। চাল,ডাল, তেল, লবন, আলু প্রত্যেকটা জিনিসের দাম আকাশচুম্বী। মা-বোনেরা তাদের ছেলেমেয়েদের ডিম দিতে পারে না। দ্রব্যের মূল্য কমানোর ব্যাপারে সরকারের কোনো খেয়াল নাই। বলে দাম তো ফিক্সড করে দিয়েছি। দাম ফিক্সড করলে কি দাম কমানো যায়। চুরি তো করো তোমরা। চুরি করে বিদেশে পাঠায়। আর বলো দাম ফিক্সড করে দিয়েছি।
জাতীয়তাবাদী যুব দল-জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ও জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের যৌথ উদ্যোগে সকাল সাড়ে ১১টায় বগুড়া থেকে রাজশাহী অভিমুখে এই তারুণ্যে রোড মার্চ শুরু হয়। রোড মার্চটি শান্তাহার, নওগাঁও হয়ে রাজশাহী গিয়ে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হবে মোটরবাইক, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, ট্রাকের করে কয়েক হাজার নেতাকর্মী এই রোডমার্চে অংশ নিচ্ছে।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান সভাপতিত্বে ও যুব দলের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান ও ছাত্র দলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের যৌথ সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, যুব দলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।