মৃত্যুপুরী লিবিয়ার পাশে দাঁড়াল বাংলাদেশ

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

মৃত্যুপুরী লিবিয়ায় বন্যা দুর্গতদের মানবিক সহায়তায় জরুরি ত্রাণ-সামগ্রী পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

এতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল ও বন্যার ক্ষতিগ্রস্ত লিবিয়ার মানুষের সাহায্যের জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি সি ১৩০ জে পরিবহন বিমান প্রয়োজনীয় ত্রাণ-সামগ্রী ও ওষুধসহ বৃহস্পতিবার (১৪) রাতে দেশটির উদ্দেশে যাত্রা করে।

সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (পরিচালন) এয়ার ভাইস মার্শাল এ এইচ এম ফজলুল হক বিমানটির লিবিয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ উপলক্ষে ব্রিফ করেন। এ সময়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত লিবিয়ার রাষ্ট্রদূত আব্দুলমুতালিব এসএম সুলাইমান উপস্থিত ছিলেন।

ওই পরিবহন বিমানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া ত্রাণ-সামগ্রী হিসেবে প্রয়োজনীয় শুকনো খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট এবং জরুরি জীবন রক্ষাকারী ওষুধ পাঠানোর কথা জানানো হয়। সেনাবাহিনী থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রী উল্লিখিত বিমানে লিবিয়ায় পাঠানোর কথাও জানানো হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান লিবিয়ায় ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় বাংলাদেশের দেওয়া চিকিৎসা ও অন্যান্য সামগ্রীর লোডিং কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, লিবিয়ার প্রেসিডেন্ট বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে সহযোগিতার আবেদন জানিয়েছেন। তার আবেদনের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মানবিক সহায়তা হিসেবে দ্রুত ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, বাংলাদেশ একটি মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য প্রতিনিয়ত ত্রাণ সহায়তা দিয়ে আসছে।

গত ১০ সেপ্টেম্বর ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েল ও বন্যার তাণ্ডবে উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে ব্যাপক প্রাণহানি, বিভিন্ন স্থাপনাসমূহের ক্ষয়ক্ষতিসহ মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়।

ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের তাণ্ডব এবং আকস্মিক বন্যায় নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১১ হাজার ৩০০ জনে। এ ছাড়া ২০ হাজার জনেরও বেশি মানুষ নিহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। হাজার হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। খাবার, জ্বালানি, বিশুদ্ধ পানি, বিদ্যুৎ সরবরাহ, পর্যাপ্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং আশ্রয়ের অভাবে ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা পরবর্তী সময়ে লিবিয়ায় এক সংকটময় পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে।

বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, বন্যার পর দেরনা শহর ভবিষ্যতের জন্য আর বাসযোগ্য থাকবে না। শহরটির অন্তত ৮০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, দেরনায় যে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে তার বেশিরভাগই এড়ানো যেত। ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের প্রধান পেটেরি তালাস জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, যদি স্বাভাবিক কোনও অপারেটিং আবহাওয়া পরিষেবা থাকত, তাহলে তারা সতর্কতা জারি করতে পারত। আর সেটি হলে জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে সক্ষম হতো।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com