ঢাকা: ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে নিরাপত্তাসংক্রান্ত খাতে সহায়তার জন্য জাপানের ‘অফিসিয়াল সিকিউরিটি অ্যাসিস্ট্যান্স’ (ওএসএ) কাঠামোতে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। শনিবার (২৬ আগস্ট) এক গোলটেবিল বৈঠকে ঢাকায় নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গত বছরের ডিসেম্বরেই জাপানের ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্র্যাটাজি মূল্যায়নের সময় প্রথম এই কাঠামোর ধারণাটি প্রকাশ্যে আসে। পরে চলতি বছরের এপ্রিলেই সে সময় এই সম্ভাব্য কাঠামো নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল ভারতের পত্রিকা ইকোনমিকস টাইমস।
সে প্রতিবেদনে বলা হয়, তাইওয়ান ও দক্ষিণ চীন সাগর ইস্যুতে চীনের আগ্রাসী চাপ মোকাবিলার জন্য এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে জাপানের প্রভাব বাড়ানোর জন্য সমমনা দেশগুলোকে সামরিক সহায়তা দেওয়ার নতুন পরিকল্পনা হিসেবে ওএসএ উন্মোচন করে টোকিও। তবে টোকিওর পক্ষ থেকে এ কাঠামো তৈরির পেছনে চীনবিরোধী অবস্থানের কোনো বিষয় সরাসরি বলা হয়নি।
জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য একটি ভালো নিরাপত্তা পরিবেশ তৈরিতে অবদান রাখা। শান্তিপূর্ণ জাতি হিসেবে জাপানের মৌলিক নীতি এই উদ্যোগেও বজায় থাকবে।
জাপান টাইমস এক প্রতিবেদনে এই প্রস্তাব সম্পর্কে বলেছিল, দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যতীত সামরিক উদ্দেশ্যে উন্নয়ন সহায়তায় বিরত থাকার যে জাপানের দীর্ঘদিনের নীতি, এর মাধ্যমে তা পুরোপুরি ভেঙে গেল। একই সঙ্গে জাপান টাইমসের প্রতিবেদনেও বলা হয়, চীনকে লক্ষ্য করেই এটি তৈরি করা হয়েছে।
যদিও চীনা গণমাধ্যমগুলো জাপানের এই কাঠামোকে খুব একটা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না বা হুমকি হিসেবেও মনে করছে না। হংকং-ভিত্তিক সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের অফিসিয়াল সিকিউরিটি অ্যাসিস্ট্যান্স কাঠামোর বিষয়ে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামরিক উদ্দেশ্যে আন্তর্জাতিক সাহায্যের বিষয়ে টোকিওর সিদ্ধান্ত বড় পরিবর্তন হলেও এশিয়ায় এটি কোনো অস্ত্র প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করবে না।
বেইজিং মূলত কোয়াড জোটকে তাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করে। এ জোটভুক্ত দেশগুলো হলো—যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া।
টোকিওর পক্ষ থেকেও স্পষ্ট করা হয়েছে, এই কাঠামোর আওতায় কোনো কৌশলগত অস্ত্রের আদানপ্রদান হবে না। শুধু সামরিক অবকাঠামো, যন্ত্রাংশ ও লোনের ক্ষেত্রে সহায়তা পাবে কাঠামোভুক্ত দেশগুলো।
এ কাঠামোতে এরই মধ্যে প্রথম চারটি দেশ নির্বাচিত করেছে টোকিও। বাংলাদেশ ছাড়াও সে তালিকায় রয়েছে ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া ও ফিজি।
সূত্র : ইকোনমিকস টাইমস/জাপান টাইমস/ সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট