স্পোর্টস ডেস্ক : গুরবাজ-ইব্রাহিম জাদরানের ২২৭ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপে ভর করে ৩০০/৫ স্কোরেও লাভ হয়নি আফগানিস্তানের। গুরবাজের ক্যারিয়ারসেরা ১৫০ রানের ইনিংস ম্লান করে দিয়েছেন ইমাম উল হক (৯১),বাবর আজম (৫৩), সাদাব খান (৪৮)। এই ত্রয়ীর ব্যাটিংয়ে হাম্বানটোটায় ১ বল হাতে রেখে ১ উইকেটে জিতে সিরিজ জয়ের উৎসব করেছে পাকিস্তান।
শেষ ১২ বলে ২৭ রানের টার্গেট পাকিস্তানের কাছে দুরূহই মনে হচ্ছিল। তবে ৪৯তম ওভারের শেষ দুই বলে আবদুল রহমানকে স্কোয়ার লেগ দিয়ে বাউন্ডারি এবং ছক্কায় শেষ ওভারে টার্গেটটা ১১ রানে নামিয়ে আনেন সাদাব খান।
৫০তম ওভারের প্রথম বল ডেলিভারি না দিয়ে সাদাব খানকে (৩৫ বল ৩ চার, ১ ছক্কায় ৪৮) রান আউট করে ফজলহক ফারুকী উ্ৎসবের আবহ দিলেও পরের ডেলিভারিতে নাসিম শাহ’র হাতে খেয়েছেন বাউন্ডারি।
শেষ ওভারের ৪র্থ বলে হারিস রউফ ৩ রান নিলে শেষ ২ বলে জয়ের জন্য মাত্র ২ রানের প্রয়োজন পড়ে। ৫ম বলে নাসিম শাহ থার্ডম্যান দিয়ে বাউন্ডারিতে শেষ ওভার থ্রিলারে জয় হয় পাকিস্তানের। ১ ম্যাচ হাতে রেখে ওয়ানডে সিরিজের ট্রফি নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান।
সেই একই ভেন্যু, হাম্বানটোটা। পার্থক্যটা ব্যাটিংয়ে। দুই দিন আগে পাকিস্তানের কাছে মাত্র ৫৯ রানে অল আউট হয়েছে আফগানিস্তান শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটায়। ৪৮ ঘন্টা পর সেই ভেন্যুতে আফগানিস্তানের স্কোর ৩০০/৫।
এদিন আফগানিস্তানের ওপেনিং জুটি করেছেন নিজেদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পার্টনারশিপ। গত মাসে চট্টগ্রােমে ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে রাহমানুল্লাহ গুরবাজ-ইব্রাহিম জাদরানের ২৫৬ রানের পার্টনারশিপ ওপেনিংয়ে আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ।
সেই রেকর্ডকে সম্মান জানিয়ে বৃহস্পতিবার হাম্বানটোটায় এই একই জুটি থেমেছেন ২২৭ রানে। পাকিস্তান লেগ স্পিনার উসমান মীরকে খেলতে যেয়ে লং অফে ক্যাচ দিয়ে ইব্রাহিম জাদরান ৮০ রানে ফিরে গেলে ২৩৯ বলে পার্টনারশিপ বিচ্ছিন্ন হয় ২২৭ রানে।
ফলে যে গতিতে উঠছিল আফগানিস্তানের রান, সেই গতি থেমে যায়। রাহমানুল্লাহ গুরবাজ গত মাসে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৪৫ রানের যে ইনিংসটি উপহার দিয়েছিলেন, ওটাই ছিল তার সেরা। বৃহস্পতিবার ক্যারিয়ার সেরা ১৫১ রানের ইনিংস দিয়েছেন উপহার এই ওপেনার।
শাহীন শাহ আফ্রিদির লেন্থ বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আসার আগে ১০০.০০ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ১৫১। যে ইনিংসে ১৪টি বাউন্ডারির পাশে ছিল তার ৩টি ছক্ক। ১২২ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৫ম সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর শেষ ৫১ রান করেছেন গুরবাজ মাত্র ২৮ বলে। আগের ম্যাচের ম্যাচ উইনার পেসার হারিস রউফকে বৃহস্পতিবার পর পর ৪টি বাউন্ডারি মেরেছেন সেঞ্চুরির পর।
পাকিস্তানের দুই পেসার শাহীন শাহ আফ্রিদি এবং নাসিম শাহ শেষ স্পেলে আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। শাহীন শাহ শেষ স্পেলে পেয়েছেন ২ উইকেট (৩-০-২০-২), নাসিম শাহ শেষ স্পেলে পেয়েছেন ১ উইকেট (২-০-১২-১)। পাকিস্তান লেগ স্পিনার উসমান মীর পেয়েছেন ১ উইকেট (১/৬১)।
৩০১ রানের জবাব দিতে এসে শুরু থেকে পাকিস্তান ওপেনার ইমাম উল হক ছিলেন ইতিবাচক। মুজিব জাদরানের বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দেয়ার আগে করেছেন ইমাম ১০৫ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৯১ রান। বাবর আজম ফজলহক ফারুকীর বলে হাফ হার্টেড ফ্লিক করতে যেয়ে দিয়েছেন মিড অনে ক্যাচ (৬৬ বলে ৬ বাউন্ডারিতে ৫৩)।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ইমাম-বাবর যোগ করেছেন ১১৮ রান। আফগানিস্তানের ফজল হক ফারুকি পেয়েছেন ৩ উকেট (৩/৬৯)। অভিজ্ঞ অফ স্পিনার নবী পেয়েছেন ২ উইকেট (২/৪৬)। তবে লেগ স্পিনার রশিদ খান কাটিয়েছেন উইকেটহীন (০/৫৩)। আবদুল রহমান ছিলেন খরুচে বোলার (১০-০-৮৩-১)।
আফগানিস্তান : ৩০০/৫ (৫০.০ ওভারে)
পাকিস্তান : ৩০২/৯ (৪৯.৫ ওভারে)
ফল : পাকিস্তান ১ উইকেটে জয়ী।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ : সাদাব খান (পাকিস্তান)।