২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সঙ্গে নিঃসন্দেহে খালেদা-তারেক জড়িত: প্রধানমন্ত্রী

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার সঙ্গে খালেদা জিয়া ও তারেক গঙ্গরা যে জড়িত তাতে কোন সন্দেহ নেই। তিনি বলেন, হত্যা ও খুনের রাজনীতিটাই তারা করে। একটা রাজনৈতিক দল ও একটা পরিবার কে নিশ্চিহ্ন করা রাজনীতি বিএনপি করে। খালেদা জিয়া করে। বাংলাদেশে আসার পর বারবার আমাকে হামলা করা হয়েছে। কোটালীপাড়ায় ৭৪ কেজি বোমা হামলা পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আমাকে বারবার আঘাত করা হয়েছে। তারা যে বলেছিল শেখ হাসিনার কোনদিন প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না। আওয়ামী লীগ ১০০ বছরেও ক্ষমতা আসতে পারবেনা। কেন বলেছিল? বলেছিল এই ষড়যন্ত্রের কথা ভেবে। তারা ষড়যন্ত্র করে চেয়েছিল। পরিকল্পিতভাবে আমাদের নেতা কর্মীদের উপর হত্যা করা হয়েছে। অগ্নি সন্ত্রাস করে কিভাবে খালেদা জিয়া আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে। এগুলো সবার জানা উচিত। দেখা উচিত। এটাই বিএনপির চরিত্র। এটাই বিএনপির আসল চেহারা। বিএনপির টাকায় সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করা হয়েছিল। তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। এই মামলায় শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানের নাম এসেছে।

সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত ২১ আগস্ট গ্ৰেনেড হামলায় শহীদদের স্মরণে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে প্রথমে ২১ আগস্ট শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা। এসময় প্রধানমন্ত্রী কিছুক্ষণ নিরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে সভার শুরুতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এসময় হযরত মাওলানা মুফতি মিজানুর রহমান মোনাজাত পরিচালনা করেন। পরে কেন্দ্রীয় ১৪ দল, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়া পরিবার একটা খুনি পরিবার। যারা স্বজনহারানোর বেদনা নিয়ে এখনো কাঁদেন। আপনারা মানুষের কাছে যান। কিভাবে দেশের মানুষকে ক্ষুধার্ত রেখেছে। কিভাবে দেশকে ধ্বংস করেছে। কিভাবে দেশে সন্ত্রাস করেছে। আপনারা মানুষ কাছে বলেন। ওরা একটা শিশুকেও রেহাই দেয়নি। কিন্তু আল্লাহর মাইর দুনিয়ার বাইর। আমরা ক্ষমতায় আসার পর মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি। মানুষকে ঘর দিচ্ছি, চিকিৎসা দিচ্ছি, লেখাপড়া ব্যবস্থা করে দিয়েছি। মানুষের কল্যাণে আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের কাজ করে। বঙ্গবন্ধু ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছেন। আমি যতদিন বেঁচে আছি মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাব। ঘুষ খোর, দুর্নীতিবাজ ও খুনিরা যেন এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলতে না পারে। সেটি আমরা চাই।

তিনি বলেন, একটি নয় ১৩ টা গ্রেনেড। সেদিন যে বেঁচে গিয়েছিলাম সেটাই অবাক বিষয়। সেদিন ২২ জন নেতাকর্মী শহীদ হন। হাজারের বেশি নেতাকর্মী আহত হন। সেদিন কেউ সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। বরং টিয়ার গ্যাস ছুড়ে সবাইকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। আমি যখন গাড়িতে যাচ্ছিলাম আমার গাড়িতেও গুলি করা হয়। এমন ধরনের ঘটনা একটা রাজনৈতিক দলের উপর করতে পারে সেটা কল্পনা করাও যায় না। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ছুটে আসে, হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করে। সেদিন পুলিশ ছুটি আসেনি বরং লাঠিচার্জ শুরু করে। সেদিন আলামত তারা রাখেনি। সেদিন সিটি কর্পোরেশনে গাড়ি এসে সমস্ত আলামত ধীরে ধুয়ে মুছে সাফ করে ফেলে। সেদিন কোন আলামত রাখতে দেয়নি। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজে ও ঢাকা মেডিকেল কলেজে কোন চিকিৎসকরা আসেননি চিকিৎসা করতে। আমি বেঁচে যাই। লাশের পর লাশ পড়ে আছে। পরে আমি গাড়ি পাঠাই। লোক পাঠাই।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে যারা ভোটাধিকার কথা বলে। মানবাধিকারের কথা বলে। ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইতে পারিনি। আমাকে ধানমন্ডি 32 নম্বর বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমি আদালতে গেছি। ইন্ডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে টিচার বন্ধ করে রাখা হয়েছিলো। সেদিন মানবাধিকার কোথায় ছিল? বরং সেদিনের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। এদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘন বারবার হয়েছে। খালেদা জিয়া তারেক রহমান নিজামীসহ তারা একাধিকবার মানবাধিকার লংঘন করেছে। সেদিন মানবাধিকার কোথায় ছিল। সেদিন বিচারের অধিকার টুকু আমাদের কাছ থেকে কেরে নেওয়া হয়েছিল।

তিনি বলেন, ২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে রায় হয়েছে। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা তারেক রহমান তো বাইরে। সাহস থাকলে বাংলাদেশে আসে না কেন? পারলে বাংলাদেশে আসুক। বাংলাদেশের মানুষ তাকে ছাড়বেনা। বঙ্গবন্ধুকে ৭৫ এর হত্যার পর জয় বাংলা স্লোগান দিতে পারতো না।

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপের সঞ্চালনায় এ আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com