ঢাকা-৫ : বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় নবীউল্লা ও সেলিম

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০২৩

ঢাকা: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিটি আসনেই বইছে নির্বাচনী হাওয়া। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এরই মধ্যে শুরু করেছেন প্রচার প্রচারণা। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখনো প্রচারণায় নামেননি। কারণ কেন্দ্র থেকে এখনও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে ‘গ্রিন সিগন্যাল’ মেলেনি। তবে ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি নিচ্ছেন অনেকে।

ঢাকা-৫ সংসদীয়টি আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি এখানে এমন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে চায় যার পক্ষে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে টেক্কা দেওয়া সম্ভব হবে।

দলটির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী আছেন দুইজন। এর মধ্যে একজন হলেন নবীউল্লাহ নবী। তিনি ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত ‘বিতর্কিত’ সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে অংশ নিয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে ৬৭ হাজার ৫৭২ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি। অন্যজন বিএনপির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া। তিনি ২০০৮ ও ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে বিএনপির প্রাথমিক ও বিকল্প প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন।

অবস্থানগত দিক থেকে ঢাকা-৫ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আসন। আসনটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মধ্যে অবস্থিত। এই আসনটিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দলটির ৪ জন প্রার্থী বিভিন্ন সময় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের ৫ জন প্রার্থী সংসদ সদস্য হয়েছেন। অর্থাৎ এমপি হওয়ার হিসাবে এখানে আওয়ামী লীগ ৫-৪ এ এগিয়ে আছে।

বিএনপি নেতারা বলছেন, আগামী সংসদ নির্বাচন কোন প্রক্রিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে তা এখনও চূড়ান্ত নয়। একইভাবে আগামী নির্বাচনে বিএনপি জোটবদ্ধ হয়ে অংশ নিলে আন্দোলনের সঙ্গীদের অনেক আসন ছাড় দিতে হবে। ফলে, কোন আসনে বিএনপির চূড়ান্ত প্রার্থী কারা হচ্ছেন তা এখনই বলা যাচ্ছে না। এছাড়া ঢাকার আসনগুলোর মধ্যে মির্জা আব্বাস, প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকা ও সালাহ উদ্দিন আহমেদের আসন ছাড়া বাকি আসনগুলোতে প্রার্থীর পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে, এ মুহূর্তে ঢাকা-৫ আসনে নবীউল্লাহ ও অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার নামই আলোচনায় আছে।

বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বলছেন, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা কোনো প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন না। কিন্তু দলের সাংগঠনিক কাজ করতে গিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হচ্ছে। একইসঙ্গে এলাকার জনগণের সঙ্গেও তাদের যোগাযোগ রয়েছে। ফলে, এটা করতে গিয়ে একদিকে যেমন দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, অন্যদিকে নির্বাচনী গণসংযোগও হয়ে যাচ্ছে।

এই আসনে ২০১৮ সালের বিএনপির প্রার্থী নবীউল্লা নবী বলেন, আমি সারাক্ষণ মাঠে থাকি। জনগণের সঙ্গে থাকি। এতে যেমন একদিকে দলের সাংগঠনিক কাজ হয়, অন্যদিকে আমার নির্বাচনী কাজটাও হয়ে যায়। গত নির্বাচনেও আগের রাতে ৪০ শতাংশ ভোট কেড়ে নেওয়ার পরও আমি সারা দেশে বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছি। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আমি এখন সংসদ সদস্য থাকতাম।

তিনি আরও বলেন, সরকার একের পর এক গায়েবি ও মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। যাতে নেতাকর্মীরা বাড়িতে থাকতে না পারে। পাশাপাশি হামলা-নির্যাতন তো আছেই। তারপরও বাধা বিপত্তি যতই আসুক আমরা মাঠে থাকব। এক দফা আন্দোলনে আমরা আছি।

এক প্রশ্নের জবাবে নবীউল্লা নবী বলেন, দল যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে তো থাকতেই হবে। তার পক্ষে কাজ করতে হবে। কিন্তু এখানকার জনগণ বহিরাগতদের এখানে চায় না। তারা স্থানীয় নেতাকে চায় নির্বাচনে। এখন দল যদি এমন কাউকে মনোনয়ন দেয়, আর স্থানীয় জনগণ যদি তার পক্ষে না থাকে, তাকে মেনে না নেয় তাহলে তো আমার কিছু করার নেই।

২০০৮ ও ২০১৮ সালের ঢাকা-৫ আসনের বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছিলেন শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া। তিনি বলেন, আমি ২০০৮ এবং ২০১৮ সালে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলাম। তখন বিএনপির কোনো পোস্টে ছিলাম না। এখন আমি বিএনপির গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক। দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হলে আমি যেমন সংসদে দলের জন্য কাজ করব, তেমনি বর্তমানে ধ্বংস হয়ে যাওয়া শিক্ষাখাতের অগ্রগতির জন্যও কাজ করব।

তিনি বলেন, মানুষ বলে নির্বাচন করতে অনেক টাকা লাগে। কিন্তু আমার জন্য সেটা লাগবে না। কারণ আমি ঢাকা-৫ আসনের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ছিলাম। সেখান থেকে প্রতি বছর ১৪-১৫ শত ছাত্র-ছাত্রী এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। অভিভাবকদের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আমি নির্বাচন করলে তারাই আমার পক্ষে কাজ করবে।

জানা গেছে, স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে নবীউল্লা নবী জনপ্রিয়। দলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলা হলে তিনি খোঁজ-খবর নেন। কেউ কারাগারে গেলে তার জামিন করান তিনি। ফলে, আগামী নির্বাচনে তার মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ঢাকা-৫ আসনের ৬৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা শ্যামল বলেন, এই আসনের নেতাকর্মীদের সুখে,দুঃখে পাশে থাকেন নবীউল্লা নবী। কোনো নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হলে তার বাড়িতে খোঁজ-খবর নেওয়া থেকে শুরু করে জামিন করানো সবকিছুই তিনি করেন। নবীউল্লা বলে দিয়েছেন, ঢাকা-৫ আসনের কোনো নেতাকর্মীর নামে মামলা হলে তার সব দায়িত্ব তিনি নেবেন। আমরা চাই তাকে এখানে মনোনয়ন দেওয়া হোক।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com