ঢাকা: এশিয়ার সেরা ১০০ বিজ্ঞানীর তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশের চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (সিএইচআরএফ) বিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গাউসিয়া ওয়াহিদুন্নেসা চৌধুরী।
গবেষণায় অনবদ্য অবদানের জন্য সম্প্রতি প্রকাশিত সিঙ্গাপুরভিত্তিক সাময়িকী ‘এশিয়ান সায়েন্টিস্ট’র অষ্টম সংস্করণে ২০২৩ সালের সেরা এশীয় বিজ্ঞানীদের তালিকায় এ দুজনের নাম স্থান পেয়েছে।
বিজ্ঞানের নানা ক্ষেত্রে যুগান্তকারী উদ্ভাবনের মাধ্যমে বৈশ্বিক অগ্রগতিতে অবদান রাখা গবেষক ও আবিষ্কারকরা এই সেরা ১০০ বিজ্ঞানীর তালিকায় আছেন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘এশিয়ার গবেষকরা তাদের বড় স্বপ্ন নিয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কল্যাণে কাজ করে চলেছেন। নিজেদের টিমের সহায়তায় অযাচিত বাঁধার দেয়াল সরিয়ে এই বিজয়ীরা বিশাল সাফল্য লাভ করেছেন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক গাউসিয়া ‘সাস্টেইন্যাবিলিটি’ খাতে অবদানের জন্য এই মর্যাদাপূর্ণ তালিকায় স্থান পেয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের পর ইউনিভার্সিটি অব ক্যামব্রিজ থেকে পিএইচডি করেছেন গাউসিয়া। তিনি আন্তর্জাতিক বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংস্থা ওয়াইল্ডটিমের বোর্ড সদস্য। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির একটি গবেষণা দলেও কাজ করেছেন গাউসিয়া।
জলজ বাস্তুতন্ত্র ও বিপন্ন প্রজাতির প্রাণি সংরক্ষণে অবদানের জন্য ২০২২ সালে তিনি ওডব্লিউএসডি-এলসেভিয়ার ফাউন্ডেশন অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। তিনি প্লাস্টিকদূষণের ঝুঁকি বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করেন। মাছ ধরার পরিত্যক্ত জাল কীভাবে পুনরায় ব্যবহার করা যায়, সেটি শেখানোর মাধ্যমে তিনি দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নারীদের ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখছেন, যার মাধ্যমে ওই নারীদের আয়ের বিকল্প উৎস তৈরি হচ্ছে।
সেঁজুতি সাহা ‘লাইফ সায়েন্সে’ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এই তালিকায় স্থান লাভ করেছেন। বৈশ্বিক স্বাস্থ্য গবেষণায় সমতা লাভে অন্যতম চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ভূমিকা রাখছেন এই অণুজীব বিজ্ঞানী। চিকুনগুনিয়ার মতো যেসব ভাইরাস শিশুদের ভোগাতে পারে তা নিয়ে উল্লেখযোগ্য গবেষণা করেছেন সেঁজুতি।
স্বাস্থ্য বিজ্ঞান গবেষণায় অবদানের জন্য তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। এর মধ্যে জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনালের উইমেন অফ ইন্সপিরেশন অ্যাওয়ার্ড ২০২১ এবং ওয়েবি অ্যাওয়ার্ড ২০২০ উল্লেখযোগ্য। ২০২০ সালে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল পোলিও ইরেডিকেশন ইনিশিয়েটিভের টিআইএমবির মেম্বার নিযুক্ত হন তিনি।
গাউসিয়া ও সেঁজুতির সঙ্গে ১০০ জনের তালিকায় রয়েছেন চীন, ভারত, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন, হংকং, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের বিজ্ঞানীরা।