ড. তাহের হত্যা: প্রধান বিচারপতির কাছে ফাঁসি স্থগিত রাখার আবেদন

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৩ মে, ২০২৩

রাজশাহী : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি স্থগিত রাখাতে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করেছেন। আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসি কার্যকর স্থগিত রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে।

সোমবার (২২ মে) জাহাঙ্গীরের ভাই হাফেজ মো. সোহরাব হোসেন রেজিস্ট্রি ডাকযোগে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করেন।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপারকেও আবেদনের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে।

আবেদনে বলা হয়েছে, ‘আমি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির ভাই হিসেবে এবং অল্প শিক্ষিত একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আমার ভাই জাহাঙ্গীর আলমকে সংবিধানের ৩৩ (২) অনুচ্ছেদ এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ৬১ ধারা লঙ্ঘন করে আটক রেখে অবৈধভাবে স্বীকারোক্তি আদায়ের মাধ্যমে তার প্রতি অবিচার কিংবা সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন হয়েছে কি না সেটি খতিয়ে দেখার জন্য এবং আমার ভাইকে মৃত্যুদণ্ড থেকে রক্ষার জন্য আপনার কাছে একটি মানবিক আবেদন জানাচ্ছি।’

২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক তাহেরের মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপর ৩ ফেব্রুয়ারি নিহতের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

এই মামলায় ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছিল পুলিশ। মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও দুজনকে খালাস দেন রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, নিহত অধ্যাপক ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলম, জাহাঙ্গীর আলমের ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের স্ত্রীর বড় ভাই আব্দুস সালাম।

তবে বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিরা আপিল করেন। পরে শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল মামলার দুই আসামি মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল রেখে অপর দুই আসামির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। এরপর আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল করেন। পাশাপাশি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামির দণ্ড বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।

পরবর্তীতে শুনানি শেষে গত বছরের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের রায় বহাল রাখেন। ওই বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। এরপর আসামিরা রিভিউ আবেদন করেন। সবশেষ গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রিভিউর ওপর শুনানি শুরু হয়।

গত ১৪ মে সংবিধান ও ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসরণ না করে স্বীকারোক্তি নেওয়ার বিষয় চ্যালেঞ্জ করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর হোসেনের করা রিট খারিজ করে দেন আদালত। এর ফলে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি শিক্ষক মহিউদ্দিন ও কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীরের ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো আইনি বাধা নেই। পরে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চান তারা।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com