ভর্তিপরীক্ষার প্রথম দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে আহত ১০

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় শনিবার, ২০ মে, ২০২৩

পাবনা : পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথমবর্ষের গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষার প্রথমদিনে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ সংঘর্ষে কমবেশি ১০ জন আহত হয়েছে। তুচ্ছ ঘটনায় সৃষ্ট সংঘর্ষে গুরুতর আহত কয়েকজনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার (২০ মে) দুপুর পৌনে ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবু ও সাধারণ সম্পাদক মো.নুরুল্লাহ পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

তবে সংঘর্ষে ছাত্রলীগের সম্পৃক্ততার অস্বীকার করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর দায় চাপালেন ছাত্রলীগের নেতারা। ঘটনাটিকে নিছক ভুল বোঝাবুঝি বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার ছিল পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক প্রথমবর্ষের গুচ্ছভিত্তিক ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ছিলো। দুপুর ১২টা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাবনায় আসেন কয়েক হাজার শিক্ষার্থী-অভিভাবক। তাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ছিলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

ভর্তি পরীক্ষা শেষে বিশ্ববিদ্যায়ের প্রবেশমুখে মোটরসাইকেল রাখা নিয়ে ছাত্রলীগকর্মী নাজমুল ও প্রান্ত’র মধ্যে কথা কাটাকাটি এবং ধাক্কাধাক্কি হয়। পরীক্ষার কথা ভেবে তখন তাদের থামিয়ে দেয় উপস্থিত অন্যান্যরা।

এর কিছুক্ষণ পর বেলা পৌনে ২টার দিকে ওই বিরোধের জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবু ও সাধারণ সম্পাদক মো.নুরুল্লাহ পক্ষের সমর্থকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন কমবেশি আহত হয়। তাদের পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত দুই শিক্ষার্থী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, পরীক্ষা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে মোটরসাইকেল রাখা নিয়ে একটা বিরোধ বাধে। তার জেরে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবুর উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারপিট করে শিক্ষার্থীদের। হামলায় আহতদের বেশিরভাগই সাধারণ সম্পাদক মো.নুরুল্লাহ পক্ষের সমর্থক।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, ঘটনাটি ন্যাক্কারজনক বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন করেছে। ভর্তি পরীক্ষার দিনে ছাত্রলীগের মারামারি করা কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। এ কারণে অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা হবে।

তবে সংঘর্ষে নিজেদের ও ছাত্রলীগের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর দায় চাপালেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবু ও সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল্লাহ।

তারা বলেন, মোটরসাইকেল রাখা নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটু ঝামেলা হয়। সেখান থেকে হলে গিয়ে কিছু মারামারি হয়েছে। ছাত্রলীগের কেউ এর সাথে জড়িত নয়। এখানে ছাত্রলীগের কোনো গ্রুপিং নেই। তবে, সংঘর্ষের ঘটনায় যদি ছাত্রলীগের কেউ জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তারা।

ছাত্রলীগের সাথে একই সুরে সুর মিলিয়ে সংঘর্ষের ঘটনাটিকে ভুল বোঝাবুঝি হিসেবে উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কামাল হোসেন বলেন, ঘটনাটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে হয়েছে। এখানে ছাত্রলীগের মধ্যে ঝামেলা হয়নি। তারপরও যেহেতু ছাত্রলীগের কথা আসছে, সেজন্য আমরা সবার সাথে বসে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি। আশা করছি দ্রুতই সমাধান হয়ে যাবে।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান বলেন, তুচ্ছ ঘটনায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে সাথে সাথে পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছে। যেহেতু ভর্তি পরীক্ষা চলছে, দুর-দুরান্ত থেকে অভিভাবক-শিক্ষার্থীরা এসেছেন, তাই সবাইকে শান্ত থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন। তিনি জানান অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com