আন্তর্জাতিক ডেস্ক: তরুণ-তরুণীদেরকে প্রেম করার ও সন্তান নেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। এমনকি প্রেমের জন্য অফিসে কাজ একটু কম করলেও কোনও সমস্যা হবে না বলেও ঘোষণা করা হচ্ছে। জন্মাহার বাড়াতে এমন পদক্ষেপ নিচ্ছে চীন।
তরুণদের সন্তান নিতে উৎসাহ দিতে ২০ রকম প্রস্তাব দিচ্ছে চীনা সরকার। প্রশাসন বলছে, যত খুশি প্রেম করো, পারলে অফিসে কাজ কম করে প্রেম করো, বিয়ে করো, সন্তান নাও। এর জন্য যা যা দরকার সব দেবে সরকার। দম্পতিদের জন্য নানা সুযোগসুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করছে দেশটি।
১৯৮০ থেকে ২০১৫ সাল অবধি চীনা সরকারের ‘এক সন্তান নীতি’র কারণে ভয়াবহ আকারে কমেছে জন্মাহার। সরকারি পরিসংখ্যান সংস্থা ‘ন্যাশনাল ব্যুরো স্ট্যাটিস্টিকস’ একটি রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশ করা হয়।
সেখানে দেখা গেছে, ২০২২ সালে চীনের জনসংখ্যা গত ৬০ বছরের তুলনায় অনেক কম। এমনকি কমেছে জন্মহারও। এর প্রভাব সরাসরি চীনের অর্থনীতির ওপর পড়তে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
২০২২ সালে চীনের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ৩ শতাংশ। গত চার দশকে যা সবচেয়ে খারাপ। অবশ্য এই পরিসংখ্যানের নেপথ্যে জনসংখ্যার চেয়ে কোভিডের ভূমিকা বেশি। তবে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এই হারে চীনের জনসংখ্যা কমতে শুরু করলে অদূর ভবিষ্যতে এটাই হয়ে উঠবে অর্থনৈতিক সংকটের মূল কারণ।
রিপোর্ট বলছে, ১৯৪৯ সালে চীনে যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল, ২০১৯ সালের হিসেবে সেটা অনেকটাই কম। শুধু কম নয়, রীতিমতো উদ্বেগজনক। পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৪৯ সালের পর থেকে চীনে প্রতি হাজার জনে জন্মহার ছিল ১০.৯৪। আর এ বছর প্রতি হাজার জনে জন্মহার ৬.৭৭।
তবে চীনে জন্মাহার বাড়াতে উৎসাহ নেই সাধারণ মানুষের। তারা মনে করেন- গর্ভবতী হওয়া মানেই চাকরিতে সমস্যা, চাকরি ছাড়লে আর্থিক চাপ, সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করতে হলে ভালো শিক্ষা দিতে হবে তারও খরচ অনেক, সন্তানের দেখাশোনার খরচও কম নয়– এইসব ঝক্কি নিতে রাজি হচ্ছেন না কমবয়সিরা।
তরুণ-তরুণীদের মধ্যে উৎসাহ জাগাতে নানা ধরনের প্রস্তাব আনছে চীন সরকার। প্রেম করার জন্য সময় দেওয়া হচ্ছে। অফিসে ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে হবে না। ছুটিও দেবে অফিস। সন্তানের দেখাশোনা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এমনকি মায়ের স্বাস্থ্য–সবকিছুর খরচই দেবে সরকার।
আগামী চার-পাঁচ দশকে চীনে বাড়বে প্রবীণদের সংখ্যা। ২০২০ সালের পর থেকে ২০৪০ সাল পর্যন্ত চীনে ষাট পেরোনো মানুষের সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ৭৫ শতাংশ। তাই এখন এক সন্তান নীতিকে তিন সন্তান নীতিতে নিয়ে যেতে মরিয়া চীন।
সূত্র: বিবিসি ও দ্য ওয়াল