হাদিসের আলোকে ঘুমের আগে ৮ আমল

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

মুমিনের প্রতিটি কাজই ইবাদত। ঘুমও এর ব্যতিক্রম নয়। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তোমাদের নিদ্রাকে করেছি— ক্লান্তি দূরকারী।’ (সুরা নাবা, আয়াত : ০৯)

যদি কোনো ব্যক্তি ইসলামের নির্দেশিত পদ্ধতিতে ঘুমায়, তার ঘুমও ইবাদতে পরিণত হয়। রাতে ঘুমানোর আগে কিছু করণীয়-বর্জনীয় কাজ রয়েছে। এখানে ঘুমানোর আগের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল দেওয়া হলো—

এক. দোয়া পড়া

রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি শোয়ার পর আল্লাহর নাম নেয় না, তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে লাঞ্ছনা নেমে আসবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৫৬)

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যখন ঘুমানোর ইচ্ছা করতেন তখন তাঁর ডান হাত তাঁর গালের নীচে রাখতেন, তারপর এ দো‘আটি বলতেন। (আল্লাহুম্মা বিস্মিকা আমুতু ওয়া আহ্‌ইয়া) অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! তোমার নামে আমি শয়ন করছি এবং তোমারই দয়ায় আমি পুনর্জাগ্রত হব।’। হাদিস শরিফে ঘুমানোর আগে কয়েকটি দোয়া বর্ণিত হয়েছে। সব দোয়া পড়তে না পারলেও ছোট এই দোয়াটি পড়া যায়।

দুই. সুরা ইখলাস ও নাস-ফালাক পড়ে শরীরে ফুঁ দেওয়া

আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) প্রতি রাতে যখন বিছানায় যেতেন, তখন দুই হাত একত্র করে তাতে সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পড়ে ফুঁ দিতেন। অতঃপর মাথা ও চেহারা থেকে শুরু করে যত দূর সম্ভব দেহে তিনবার দুই হাত বোলাতেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৫০১৭)

তিন. আয়াতুল কুরসি পড়া

রাসুল (সা.) বলেন, ‘তুমি যখন শয্যা গ্রহণ করবে, তখন আয়াতুল কুরসি পড়বে। তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে সর্বদা তোমার জন্য একজন রক্ষক থাকবে এবং সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার কাছে আসতে পারবে না।’ (বুখারি, হাদিস : ২৩১১)

চার. সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়া

কোনো ব্যক্তি ঘুমানোর আগে এ দুই আয়াত পড়লে তা তাদের গোটা রাতের নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট হবে।

রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যদি কোনো ব্যক্তি সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত পাঠ করে, তবে এটিই তার জন্য যথেষ্ট। (বুখারি, হাদিস : ৫০৪০)

পাঁচ. সুরা মুলক পড়া

রাসুল (সা.) বলেছেন, কোরআনের মধ্যে ৩০ আয়াতবিশিষ্ট একটি সুরা আছে, যেটি কারো পক্ষে সুপারিশ করলে তাকে মাফ করে দেওয়া হয়। সুরাটি হলো তাবারাকাল্লাজি বিয়াদিহিল মুলক (সুরা মুলক)। (তিরমিজি, হাদিস : ২৮৯১)

প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সাঃ) বলেন, যে ব্যাক্তি প্রত্যেক রাতে তাবারকাল্লাযী বিইয়াদিহিল মুলক (সূরা মূলক) পাঠ করবে এর মাধ্যমে মহিয়ান আল্লাহ্ তাকে কবরের আযাব থেকে রক্ষা করবেন। (নাসাই – শাইখ আলবানি (রঃ) হাদিসটাকে হাসান সহিহ বলেছেন এছাড়াও (তিরমিজি, হাদিস : ২৮৯১)।

ছয়. কুরআনের এক তৃতীয়াংশ পড়া

একদা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) তার সাহাবাদের বললেন, তোমাদের কেউ কি এক রাতে এক তৃতীয়াংশ কুরআন পড়তে অসমর্থ হবে? এতে সকলকে বিষয়টি ভারী মনে হলো। বলল, একাজ আমাদের মধ্যে কে পারবে, হে আল্লাহর রাসূল?! তিনি বললেন, সূরা ইখলাস হল এক তৃতীয়াংশ কুরআন। (বুখারী হাদিস :- ৫০১৫)

সাত. তাসবিহ পাঠ

প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সাঃ) হযরত আলী এবং ফতেমা (রাঃ)- কে বলেন, আমি কি তোমাদেরকে এমন কিছু বলে দিবো না যা তোমাদের জন্য খাদেম অপেক্ষাও উত্তম হবে? যখন তোমরা তোমাদের বিছানায় যাবে, তখন তোমরা ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ্, এবং ৩৪ বার আল্লাহু আকবার বলবে, তা খাদেম অপেক্ষাও তোমাদের জন্য উত্তম হবে। (বুখারী হাদিস :-৩৭০৫)।

আট. সূরা কা-ফিরুন পাঠ

প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সাঃ) বলেছেন, রাতে (কুল ইয়া আইয়্যু হাল কা-ফিরুন) (অর্থাৎ সূরা কা-ফিরুন) পাঠ করা শির্ক থেকে মুক্তি পেতে উপকারী। _(সহীহ তারগীব-৬০২)।

মহান আল্লাহ আমাদের এই আমলগুলো করার তাওফিক দিন এবং আমাদের সর্বোত্তম সওয়াব ও প্রতিদান দিন। আমিন।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com