জুমাবারে সকল সৃষ্টি ভীত-সন্ত্রস্ত থাকে যে কারণে

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২৩

ধর্ম ডেস্ক: জুমাবার মুসলমানদের কাছে একটি কাঙ্ক্ষিত দিন। এই দিনকে সাপ্তাহিক ঈদ বলা হয়েছে হাদিসে। সৃষ্টিজগতের শুরু থেকে দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জুমার দিনেই সংঘটিত হবে মহাপ্রলয় বা কেয়ামত। 

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘সূর্য যেসব দিন উদিত হয় অর্থাৎ দিনসমূহের মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমার দিন। এই দিনে আল্লাহ তাআলা আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করেছেন। তাঁকে দুনিয়াতে নামানো হয়েছে। এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। তাঁর তওবা কবুল হয়েছে। এই দিনেই কেয়ামত সংঘটিত হবে। মানুষ ও জ্বিন ছাড়া এমন কোনো প্রাণী নেই, যারা কেয়ামত কায়েম হওয়ার ভয়ে জুমার দিন ভোর থেকে সূর্য ওঠা পর্যন্ত চিৎকার করতে থাকে না। জুমার দিন একটি সময় আছে, কোনো মুসলিম যদি সে সময় নামাজ আদায় করে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাকে তা দান করবেন।’ (মুআত্তা মালেক: ২৯১; মুসনাদে আহমদ: ১০৩০৩; আবু দাউদ: ১০৪৬; নাসায়ি: ১৪৩০; সহিহ ইবনে হিব্বান: ২৭৭২)

আরেক হাদিসে এসেছে, নবী (স.) ইরশাদ করেছেন, সূর্য যেসব দিন উদিত হয় অর্থাৎ দিনসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম দিন হলো জুমার দিন। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিন তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে। এই দিনই তাকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে। কেয়ামতও সংঘটিত হবে এই দিনেই। (সহিহ মুসলিম: ৮৫৪; মুসনাদে আহমদ: ৯৪০৯; তিরমিজি: ৪৮৮)

হাদিসে লক্ষণীয়- জুমার দিনের বিশেষ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে। এসবের মধ্যে যোগ হয়েছে কেয়ামতও, যা সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। যার ভয়ে ভীত ও আতঙ্কিত থাকে সকল সৃষ্টিকুল। বলা হয়েছে, আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতারা পর্যন্ত জুমার দিন (কেয়ামতের আশঙ্কায়) ভীত-সন্ত্রস্ত থাকে। পৃথিবী, আকাশ, বাতাস, পাহাড়, পর্বত, সাগর সবকিছু জুমার দিন (কেয়ামতের আশঙ্কায়) উদ্বিগ্ন থাকে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা: ৫৫৫৯; মুসনাদে আহমদ: ১৫৫৪৮; ইবনে মাজাহ: ১০৮৪১)

উপরের হাদিসগুলোতে উদ্ধৃত হয়েছে- জুমার দিন সব প্রাণী এই ভয়ে আতঙ্কিত থাকে যে, না-জানি আজই কেয়ামত হয়ে যায়। এবারতের ভিন্নতায় আরেক হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, সূর্যের উদয় ও অস্ত যাওয়া দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিনের চেয়ে শ্রেষ্ঠ দিন নেই। মানুষ ও জিন ব্যতীত এমন কোনো প্রাণী নেই, যা জুমার দিন (কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কায়) ভীত-সন্ত্রস্ত থাকে না।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজজাক: ৫৫৬৩; মুসনাদে আহমদ: ৭৬৮৭; মুসনাদে আবু ইয়ালা: ৬৪৬৮)

সবগুলো হাদিসই প্রমাণ করছে, মানুষ ও জ্বিন ছাড়া সবকিছু এমনকি আকাশ-বাতাস, পাহাড়-সাগরও জুমার দিন শুরু হলেই ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমার দিনের গুরুত্ব অনুধাবন করার তাওফিক দান করুন। অন্তরে আল্লাহর ভয় জাগ্রত করার বা তাকওয়া অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন। 

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com