পুঁজিবাজার উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংককে বিএমবিএ’র ৬ প্রস্তাব

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২২

ঢাকা: দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ)। সংগঠনটি এক চিঠিতে বন্ড ও মিউচুয়াল ফান্ডের বিনিয়োগকে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমার (Bank Exposure) বাইরে রাখাসহ ৬ দফা সুপারিশ করেছে।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই সুপারিশ করা হয়েছে।

বিএমবিএ সভাপতি মোঃ ছায়েদুর রহমান এবং সেক্রেটারি জেনারেল মোঃ রিয়াদ মতিন সাক্ষরিত এই চিঠিতে ২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিভিন্ন প্রকার প্রতিকূলতার কথা উল্লেখ করে বলা হয়, এবিষয়ে কোনো কোনো সময় আংশিক / খন্ড পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তাতে সাময়িক কিছুটা ইতিবাচক অবস্থা দেখা গেলেও কয়েকদিনের মধ্যেই আবার ধারাবাহিক নিম্নধারায় চলে যায় এবং হতাশার তৈরি হয়। এমন নেতিবাচক অবস্থায় আপনি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং দ্রুত গতিতে কিছু পুরাতন সমস্যার সমাধান করেন, যার ফলে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটি আশার সঞ্চার হয় এবং ধীরেধীরে অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পায়। আপনার এ অল্প সময়ের মধ্যে যে উদ্যোগ ও সমর্থন পুঁজিবাজারের জন্য দিয়েছেন তার জন্য বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে। আমরা আশা করি যে, আপনার দূরদর্শী নেতৃত্ব ও সহযোগীতার মনোভাব বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে আমূল পরিবর্তন ঘটতে পারে।

এসময় চিঠিতে খন্ডিত আকারের বিভিন্ন সময় পদক্ষেপ নেওয়ার চেয়ে ৬ টি বিষয়াদি তুলে ধরে সেগুলো যদি সমাধান করে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে নতুন মাত্রা পেতে পারে যা দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক গতি আরও তরান্বিত করতে পারে এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করা হয়।

সেগুলো হলো:-

১। সকল প্রকার বন্ড ও ডিবেঞ্চার পুঁজিবাজার এক্সপোজারের বাইরে রাখা।

২। মিউচুয়াল ফান্ডকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে পুঁজিবাজার এক্সপোজারের বাইরে রাখা।

৩। পুঁজিবাজার বিনিয়োগে নিজ সাবসিডিয়ারিকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে single borrower exposure relax করা।

৪। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিলে ২% সাধারণ সঞ্চিতি রাখতে হয়, অথচ অন্য সকল ঋণের ক্ষেত্রে ১% সাধারণ সঞ্চিতি রাখতে হয়। তাই ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত হয় বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে সুদের হার বেশি ধরা হয়। তাই এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা পূর্বক অন্যান্য ঋণের মতো সাধারণ সঞ্চিতি ১% ধরা হলে বাজারে অর্থের যোগান বাড়তে সাহায্য করবে।

৫। সমন্বিত পুঁজিবাজার এক্সপোজার হিসাব (Consolidated Capital Market Exposure) reporting স্থগিত করা প্রয়োজন। পুঁজিবাজারের আকার বৃদ্ধিতে এটি প্রতিবন্ধকতা।

৬। ভালো প্রতিষ্ঠান বা যারা ভালো ব্যবসা করেন তারা সহজে যেকোন পরিমান ঋণ পায়, তাই তাহারা জামানত দিয়ে সহজেই ঋণ পেয়ে যায় বলে পুঁজিবাজার থেকে পুঁজি সংগ্রহ করেনা। বড়/ ভালো মানের প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত না হলে পুঁজিবাজারের গভীরতা বাড়বে না। তাই তাদের ঋণ/মূলধন/ব্যবসার আকৃতির উপর তালিকাভুক্তির একটি কাঠামো নির্ধারণ করা যেতে পারে।

এসময় বৃহৎ/ভালো প্রতিষ্ঠান সমুহকে অর্থায়নের ক্ষেত্রে পুঁজিবাজার এর সাথে সম্পৃক্ত করা গেলে পুঁজিবাজার লাভবান হবে, বিনিয়োগকারীও লাভবান হবে, সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে তথা সার্বিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করে বিএমবিএ।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com