বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণাধীন আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান এএফএম শাহীনুল ইসলামের একাধিক আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এসব ভিডিওর সত্যতা যাচাইয়ে তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আইটি বিভাগ। আজ মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) গভর্নরকে এ সংক্রান্ত রিপোর্ট দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
এমন এক সময়ে শাহীনুল ইসলামের আপত্তিকর ভিডিও সামনে এসেছে যখন বিতর্কিত এনা পরিবহনের মালিক খন্দকার এনায়েত উল্লাহর ফ্রিজ করা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ১৯ কোটি টাকা উত্তোলনের সুযোগ দিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছেন তিনি। গত বছরের নভেম্বরে এনা পরিবহনের মালিক ও তার পরিবারের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ৫০টি অ্যাকাউন্টে ১২০ কোটি টাকা ফ্রিজ করে বিএফআইইউ। তবে চলতি বছরের এপ্রিলে ব্যাংক আল-ফালাহ চারটি অ্যাকাউন্ট পুনরায় ফ্রিজ না করে খন্দকার এনায়েত উল্লাহকে ১৯ কোটি টাকা উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হয়। সম্প্রতি দুদক এই তথ্য জানতে পেরেছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সম্প্রতি এ তথ্য জানতে পারে।
দুদকের তদন্তে আরও উঠে এসেছে, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাস থেকে দৈনিক ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা চাঁদা তুলতেন।
দুদকের আবেদনে গত ২৭ মে ১২০ কোটি টাকা ফ্রিজ করার আদেশ দেন মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত। অথচ দুদক এখন জানতে পেরেছে, এসব হিসাবে আছে ১০১ কোটি টাকা। এ অবস্থায় অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে বাকি টাকা উত্তোলনের সুযোগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএফআইইউ প্রধান এ এফ এম শাহীনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, এনা পরিবহনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু টাকা উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হয়। ব্যবসা পরিচালনার স্বার্থে অনেক প্রতিষ্ঠানকে এ ধরনের সুযোগ দিয়েছে বিএফআইইউ। দুদক থেকে জানতে চাইলে আমি ব্যাখ্যা দেব।
ছড়িয়ে পড়া আপত্তিকর ভিডিওর বিষয়ে তিনি বলেন, আমাকে হেয় করার জন্য কে বা কারা এগুলো ছড়িয়েছে। এসব ভুয়া।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জারে শাহীনুল ইসলামের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর সোমবার (১৮ আগস্ট) থেকে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনা শুরু হলে ভিডিওর সত্যতা যাচাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য প্রযুক্তি বিভাগকে।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৮ আগস্ট পদত্যাগে বাধ্য হন বিএফআইইউ’র তৎকালীন প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস। দীর্ঘদিন খালি থাকার পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে নিয়োগ পান শাহীনুল ইসলাম।
তবে গভর্নরের নেতৃত্বে গঠিত সার্চ কমিটি যে তিনজনের নাম সুপারিশ করেছিল সেই তালিকায় শাহীনুলের নাম ছিল না। এরপরও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে তাকে প্রধান হিসেবে প্রজ্ঞাপন জারির পর এ নিয়ে নানা বিতর্ক তৈরি হয়।