বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপরে সুরমার পানি, সুনামগঞ্জে ফের বন্যা

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১২ জুলাই, ২০২৪

দ্বিতীয় দফার বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জে ফের বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি ৪৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সুরমা নদীর তীরবর্তী সুনামগঞ্জ শহরের নবীনগর, ষোলঘর, লঞ্চঘাট, আরপিননগর, সাহেববাড়িঘাট, বড়পাড়া, বাগানবাড়ি, মল্লিকপুর এলাকার রাস্তাঘাটে পানি উঠেছে। পাহাড়ি ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়ক প্লাবিত হয়ে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী গত দুই দিনে সুনামগঞ্জে ৪১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। উজান ও জেলায় এরকম ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় সুরমাসহ বেড়েছে সকল নদ-নদীর পানি। পানি বাড়ায় তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের শক্তিয়ারখলা অংশে মৌসুমে তৃতীয়বারের মতো পানিতে তলিয়েছে। এতে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। যাত্রীদের এই অংশ ফেরি নৌকা করে পার হতে হচ্ছে। এই সড়কের আনোয়ারপুর অংশেও পানি উঠেছে। তবে এই অংশে পানিতে স্রোত কম থাকায় যাত্রীরা হেঁটে পারাপার হতে পারছেন। তবে অনেকে সিএনজি, মোটরসাইকেল ও অটোরিকশা চালিয়ে পার হতে পারছেন।

এদিকে আবারও তাহিরপুর থেকে বাণিজ্যিক এলাকা বাদাঘাটের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সড়কের কোনো কোনো অংশে হাঁটু পানির উপরে। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই সড়কের আশপাশের বাসিন্দাদের।

তাহিরপুরে বাসিন্দা তৌহিদুল ঢাকা পোস্টকে বলেন , কয়েক দিন পরপর এই সড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। আমরা চলাচল করতে অসুবিধায় পড়ি। এই সড়ক দিয়ে তাহিরপুর সদর হাসপাতালেও যেতে হয়। জরুরি প্রয়োজনে হাসপাতালের রোগী নিয়ে নৌকা ছাড়া যাওয়া দায়।

সুনামগঞ্জ থেকে তাহিরপুরের উদ্দেশ্য যাওয়া যাত্রী মাহবুব ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি একটি ওষুধ কোম্পানিতে কাজ করি। জরুরি প্রয়োজনে সপ্তাহে তিন দিন তাহিরপুরে যেতে হয়। শক্তিয়ারখলা সড়কের ১০০ মিটার অংশে পানি। মোটরসাইকেল নিয়ে কয়েক ঘণ্টায় পার হতে পেরেছি। আনোয়ারপুর সড়কের উপরে পানি। এই কয়েক জায়গার পানি মাড়িয়ে তাহিরপুর যেতে হয়েছে।

বাদাঘাট বাজারের শিক্ষার্থী ইয়াহিয়া বলেন, আমরা তৃতীয়বারের মতো বন্যার কবলে পড়েছি। আমাদের অনেকের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষার কারণে দুর্ভোগ বেশি পোহাতে হচ্ছে। বন্যায় পরীক্ষা নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা হচ্ছে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, সুনামগঞ্জ ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টি হওয়ার কারণে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আগামী পাঁচ দিন মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভবনা আছে। এতে নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।

এমজেইউ

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com