বাংলাদেশ-ভারতের মাঝে চালু হচ্ছে বিশ্বের দীর্ঘতম নৌবিহার

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় বুধবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গঙ্গা বিলাসের উদ্দেশ্য ভ্রমণ। তাই পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য সব রকম ব্যবস্থা রয়েছে এই প্রমোদতরীতে

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিশ্বের দীর্ঘতম নৌবিহার ‘গঙ্গা বিলাস’র যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী ১৩ জানুয়ারি বিশ্বের দীর্ঘতম এই নৌবিহারের উদ্বোধন করবেন। উত্তরপ্রদেশের বারাণসী থেকে ডিব্রুগড় হয়ে জলপথে ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে পৌঁছাবে ‘গঙ্গা বিলাস’।

দুই দেশের মাঝে চালু হতে যাওয়া গঙ্গা বিলাসকে দীর্ঘতম নৌবিহার বলা হচ্ছে তার আকারের জন্য নয়, বরং গতিপথের কারণে। প্রমোদতরীর এত বড় যাত্রাপথ বিশ্বের আর কোথাও নেই। আগামী ১৩ জানুয়ারি এই প্রমোদতরীর উদ্বোধন করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও উপস্থিত থাকবে বলে দেশটির গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার বলছে, মোট ৫০ দিন ভারত এবং বাংলাদেশের নদনদীতে চড়ে বেড়াবে ‘গঙ্গা বিলাস’। এই প্রমোদতরীর যাত্রাপথে পড়বে অন্তত ৫০টি ঐতিহাসিক স্থাপত্য ও স্থান। ঘুরতে ঘুরতে সেগুলো দেখার সুযোগ পাবেন পর্যটকরা।

মোট ৫০ দিন ভারত এবং বাংলাদেশের নদনদীতে চড়ে বেড়াবে বিলাসবহুল প্রমোদতরী গঙ্গা বিলাস

‘গঙ্গা বিলাস’র যাত্রাপথে পড়বে ভারত এবং বাংলাদেশ মিলিয়ে মোট ২৭টি নদনদী। ভারত থেকে যাত্রা শুরুর পর দীর্ঘতম জলপথে সুন্দরবন কিংবা কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানের মতো দর্শনীয় স্থান ছুঁয়ে যাবে এই তরী।

গঙ্গা বিলাসে রয়েছে পর্যটকদের মনোরঞ্জনের ঢালাও আয়োজন। গানবাজনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থার পাশাপাশি রয়েছে শরীরচর্চা, রূপচর্চার কেন্দ্রও।

বিলাসবহুল এই প্রমোদতরীতে একবারে ৮০ জন যাত্রীর থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। নদীর বুকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য প্রমোদতরীতে আলাদা স্থান নির্দিষ্ট করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রমোদতরীর ভেতরে থাকবে মোট ১৮টি কেবিন। এতে এলইডি টিভি থেকে শুরু করে সাজানো শৌচাগার, বারান্দাসহ থাকছে আরও অনেক কিছু।

জলপথে যাত্রীদের সুরক্ষার জন্য সব রকম ব্যবস্থাও করা হয়েছে এই প্রমোদতরীতে। দুর্ঘটনা এড়ানোর ব্যবস্থাও রয়েছে সেখানে। বারাণসী থেকে যাত্রা শুরু করে বক্সার, রামনগর, গাজিপুর পেরিয়ে অষ্টম দিনে পটনা পৌঁছাবে ‘গঙ্গা বিলাস’। সেখান থেকে ফারাক্কা, মুর্শিদাবাদ হয়ে কলকাতা পৌঁছাতে সময় লাগবে আরও দু’দিন।

বিলাসবহুল এই প্রমোদতরীতে একবারে ৮০ জন যাত্রীর থাকার ব্যবস্থা রয়েছে

এরপর কলকাতা থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে ‘গঙ্গা বিলাস’। বাংলাদেশের নদীতে এই প্রমোদতরী ঘুরে বেড়াবে আরও ১৫ দিনের জন্য। বাংলাদেশ থেকে গুয়াহাটি দিয়ে আবার ভারতে প্রবেশ করবে এই প্রমোদতরী। আর যাত্রা শেষ হবে আসামের ডিব্রুগড়ে।

গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র হয়ে প্রমোদতরী গঙ্গা বিলাস যাবে ডিব্রুগড়ে। পথে পড়বে ঢাকা। বাংলাদেশের রাজধানী ছুঁয়ে এই জলযাত্রায় বিদেশি পর্যটক টানাই মূল লক্ষ্য। বারাণসীর গঙ্গা আরতি বরাবরই পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে। সেই আরতি দর্শন দিয়েই শুরু হবে ‘গঙ্গা বিলাস’র বিনোদন।

সরকারি উদ্যোগে হলেও এই প্রমোদতরী পরিচালনার দায়িত্ব থাকবে বেসরকারি সংস্থার। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ইতোমধ্যে পুরো ভারতে এমন অনেক জলপথে পরিবহন ব্যবস্থা চালুর চিন্তাভাবনা শুরু করেছে।

গঙ্গা বিলাসে ভ্রমণের জন্য কত টাকা খরচ হবে, মাথাপিছু টিকিটের দাম কত, তা এখনও প্রকাশ করা হয়নি। পরিবহন এই জলযাত্রার মূল উদ্দেশ্য নয়। ‘গঙ্গা বিলাস’র উদ্দেশ্য ভ্রমণ। তাই পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য সব রকম ব্যবস্থা এই প্রমোদতরীতে রাখা হয়েছে।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com