ঋণে সতর্ক না হলে শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতিতে পড়বে মালদ্বীপ

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির একটি বড় অংশ ট্যুরিজম খাতের ওপর নির্ভরশীল। করোনাভাইরাস শুরু হওয়ার পর থেকে নানা বিধিনিষেধে এ খাত চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে মহামারি শুরুর দুই বছর শেষে মালদ্বীপের অর্থনীতি কিছুটা চাঙ্গা হতে শুরু করেছে। অর্থনীতির হিসাবে তুলনা করলে দেশটি শ্রীলঙ্কা থেকে ভালো করছে। গত চার দশক ধরে শ্রীলঙ্কা তীব্র অর্থনৈতিক মন্দার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে।

দুটি দেশই অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণে বিদেশি রাষ্ট্র বিশেষ করে চীনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কা মালদ্বীপ থেকে এগিয়ে। চীন দেশটিকে বিলিয়ন বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেয়। শ্রীলঙ্কা এমন একটি দেশ, ২০০৯ সালে গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে যেটি অর্থনৈতিক মন্দা কাটানো এবং অর্থনীতি পুনরুদ্ধার, অবকাঠামো নির্মাণসহ নানা কারণে চীনের দ্বারস্থ হয়।

কোনো দেশ যদি অভিজ্ঞ হয়, তবে ওই দেশের উচিত শ্রীলঙ্কার অভিজ্ঞতার মূল্যায়ন করা। তাদের উচিত দেশটির কাছ থেকে শিক্ষা নেওয়া। মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়ামিন চীনের সঙ্গে ঋণচুক্তি করে। মালদ্বীপে সেতু ও এয়ারপোর্ট নির্মাণে বিপুল পরিমাণ অর্থ দিচ্ছে।

২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মালদ্বীপের ইয়ামিনের পরাজয়ের পর ক্ষমতায় বসেন ইব্রাহিম সলিহ। এরপর কিছু বিষয়ে পরিস্থিতি রাতারাতি পাল্টে যায়। তিনি বেশকিছু প্রশংসামূলক পদক্ষেপ নেন মালদ্বীপের পরিস্থিতি শান্ত করার লক্ষ্যে।

কিন্তু যেহেতু রাজাপক্ষের চোখ ছিল প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ওপর যাতে তিনি তৃতীয় মেয়াদের ক্ষমতায় বসতে পারেন। রাজনৈতিক সম্পদের অব্যবস্থাপনার, জনমতের মূল্যায়ন করা মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণতন্ত্রের ওপর দমন-পীড়নের মতো কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি অনেকটাই নিরুপায় হয়ে আত্মসমর্পণ করেন।

শ্রীলঙ্কা খাদ্য, জ্বালানি, মূল্যস্ফীতির মতো অর্থনৈতিক দৈন্যের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে । স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত দেশটিকে আর এমন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়নি। দেশটির নাগরিকরা সড়কে বিক্ষোভ করছেন, সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে।

আন্দোলনকারীরা প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে ও রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগ দাবি করছেন। শ্রীলঙ্কার এক মিলিয়নের অর্ধেকের বেশি মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করে। এ পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৯ শতাংশে।

শ্রীলঙ্কার মতো ট্যুরিজম খাতনির্ভর দেশ হওয়ার পরো মালদ্বীপ সর্বোচ্চ ক্ষতের আঁচ থেকে দূরে ছিল। কারণ প্রেসিডেন্ট সলিহ দ্রুত জরুরি কিছু পদক্ষেপ নেন।

আইএমএফ ও এডিবির প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২২ সালে দ্রুতবর্ধিত পাঁচটি অর্থনীতির মধ্যে একটি হবে মালদ্বীপ।

শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ও মালদ্বীপের অর্থনীতি পরস্পরের কাছাকাছি। তবে এখন শ্রীলঙ্কা বেহাল অবস্থায় পড়েছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। এ নিয়ে মালদ্বীপ সরকারের উৎসাহী হওয়ার কিছু নেই। কেননা দেশটি ইতোমধ্যে ঋণের ক্ষেত্রে রেড লাইন পার করে ফেলেছে।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com