বাজেয়াপ্ত যুদ্ধাপরাধীর বাড়ি হবে পরিত্যক্ত সম্পত্তি

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৪ মার্চ, ২০২২

ঢাকা : আদালতের রায়ে বাজেয়াপ্ত যুদ্ধাপরাধীর বাড়িকে পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হবে- এমন বিধান রেখে ‘পরিত্যক্ত সম্পত্তির বাড়ি (সম্পূরক বিধানাবলি) আইন, ২০২২’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। একই সঙ্গে নতুন আইন অনুযায়ী, পরিত্যক্ত সম্পত্তির বাড়ি বণ্টন কিংবা অন্য যেকোনো বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানন্ত্রী। এর আগে সিদ্ধান্ত নিত গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

সোমবার (১৪ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও সচিবালয় থেকে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ বৈঠকে যোগ দেন।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এটাও ১৯৮৫ সালের অধ্যাদেশ। আমাদের দেশের পরিত্যক্ত সম্পত্তি হচ্ছে, যারা ১৯৭১ সালে দেশ ত্যাগ করে চলে গেছে, তাদের সম্পত্তি। তখন বিধি-বিধান করে পরিত্যক্ত সম্পত্তি পরিচালনা করা হতো। পরবর্তী সময়ে ১৯৮৫ সালে একটি অর্ডিন্যান্স করা হলো। যেহেতু এটা সামরিক শাসনামলের অর্ডিন্যান্স সেজন্য হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী নতুন আইন হিসেবে আনতে হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘নতুন আইন আগের মতোই হচ্ছে, ছোটখাটো দুয়েকটি সংশোধন আনা হয়েছে। আইনের মৌলিক বিষয়টি ছিল পরিত্যক্ত সম্পত্তিগুলো অর্থাৎ বাড়িগুলোকে জমিজমা নয় দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। দু-ভাগের মধ্যে ছিল- একটি তিন শতাংশ জমিসম্পন্ন বাড়ি, আরেকটি তিন শতাংশের বেশি জমির বাড়ি।’

‘তিন শতাংশের বাড়িগুলোকে নিয়ে সেইল লিস্ট বলা হতো। যেগুলো তিন শতাংশের বেশি জমির সেগুলো নিয়ে রিটেইল লিস্ট। সেইল লিস্টে বাড়িগুলো যুদ্ধাহত ও শহিদ মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে অগ্রাধিকার অনুযায়ী ১৯৭২ সালের দাম অনুযায়ী দিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘আর রিটেইল লিস্টের বাড়িগুলো পূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতায়। এসব জমিতে অনেক অফিস আছে। এগুলো সরকারি বাড়ি হিসেবে পূর্ত মন্ত্রণালয় বিভিন্ন দপ্তরকে লিজ বা ভাড়া দিয়েছে।’

নতুন আইনে কিছু নতুন বিষয় যুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীর মামলায় যদি কেউ দণ্ডিত হতো, কোর্ট যদি তার জমিজমা-সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে নেয়, তবে সেটাও পরিত্যক্ত বাড়ির মধ্যে পড়বে, যেটা আগে ছিল না।’

আদালত কর্তৃক যুদ্ধাপরাধী হিসেবে প্রমাণিত বা ঘোষিত কোনো ব্যক্তির বাড়ি বা সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে সংযুক্ত বা বাজেয়াপ্ত করে তবে তা পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হবে বলেও জানান তিনি।

আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘এখন বাড়িগুলোর যে মূল্য হয়েছে, মন্ত্রী, সচিবসহ বিভিন্ন বড় বড় অফিসাররা গুলশান-বনানীতে যেসব বাড়িতে থাকেন, এগুলো ৯৯ শতাংশই পরিত্যক্ত সম্পত্তি। এসব বাড়ির মূল্য অনেক বেড়ে গেছে। এক-একটি বাড়ির দাম কয়েশ কোটি টাকাও হবে।’

তিনি বলেন, ‘সেজন্য আইনে একটি সংশোধনী আনা হয়েছে। আগে ছিল- সরকার (সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়) এই বাড়িগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারবে। এখন এখানে সংশোধনী আনা হয়েছে, সরকার প্রধান এটা করবেন। এসব বাড়ির নিষ্পত্তির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন সরকার প্রধান (প্রধানমন্ত্রী)।’

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com