আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনে রুশ সামরিক বাহিনীর হামলায় আরও ১০ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় সেভেরোদোনেতস্ক শহরে মঙ্গলবার (৮ মার্চ) চালানো ওই হামলায় তারা প্রাণ হারান। লুহানস্ক অঞ্চলের স্থানীয় এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বুধবার (৯ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রুশ সামরিক বাহিনী মঙ্গলবার সেভেরোদোনেতস্ক শহরের আবাসিক ও অন্যান্য ভবন লক্ষ্য করে হামলা শুরু করে। তবে রুশ সেনারা কামানের গোলাবর্ষণ করেছিল কি না, তাৎক্ষণিকভাবে সেটি নিশ্চিত করতে পারেননি তিনি।
এছাড়া মঙ্গলবার ইউক্রেনের সুমি শহরে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর পৃথক বিমান হামলায় ২২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৩ জন শিশু।
সুমির আঞ্চলিক গভর্নর দিমিত্র ঝিভিতস্কি জানিয়েছেন, রাশিয়া রাতভর শহরের উত্তর-পূর্বে একটি আবাসিক এলাকায় বোমা হামলা করেছে এবং এতেই ওই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। আবাসিক এলাকায় বোমা হামলায় প্রাণহানির ঘটনাকে তিনি ‘গণহত্যা’ বলেও দাবি করেন।
বিবিসি ইউক্রেনিয়ানকে তিনি বলেন, ‘এক সন্ধ্যায় তিনটি বোমা… এটি একটি ভয়ঙ্কর রাত ছিল।’
বিবিসি বলছে, বোমা হামলায় একটি বাড়ির ৯ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া ছয়টি বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং আরও প্রায় ২০টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসাবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে বৃষ্টির মতো।
সর্বাত্মক হামলা শুরুর পর এক সপ্তাহের মধ্যেই পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির বহু শহর কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। সামরিক অবকাঠামোর বাইরে রাশিয়ার হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে আবাসিক ভবন, স্কুল ও হাসপাতাল। ধ্বংস হয়ে গেছে সামরিক-বেসামরিক বহু অবকাঠামো। আর এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধ বন্ধের জন্য রাশিয়ার ওপর বাড়ছে চাপ।
যদিও যুদ্ধ বন্ধের জন্য রাশিয়া যে দাবিগুলো করেছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো- ইউক্রেন কখনোই সামরিক জোট ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য হতে পারবে না। এছাড়া ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক ও লুহানস্কের স্বাধীনতার স্বীকৃতি দিতে হবে বলেও জানিয়েছে রাশিয়া।