মার্কিন নির্বাচন রাশিয়ার জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ?

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৪

আজকেই চূড়ান্ত ফল নির্ধারণ হতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে। এই নির্বাচনে যদি কমলা হ্যারিস নির্বাচিত হয়, তাহলে আমেরিকার ইতিহাসে যুক্তরাষ্ট্র পাবে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। আর ডোনাল্ড যদি নির্বাচিত হয়, তাহলে পুরো বিশ্বে অনেক ইস্যুাতেই গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসতে পারে। আর এটা নিয়ে পুরো বিশ্বের চোখ এখন মার্কিন মুলুকের দিকে। এমনকি এই নির্বাচনের কারণে অনেক দেশের প্রেসিডেন্টের চোখের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।

মার্কিন মুলুকে তো বটেই! বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে এ নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। কে হচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট- ট্রাম্প নাকি কমলা হ্যারিস?

২০১৬ সালের নভেম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হয়েছিলেন। রুশ-মার্কিন সম্পর্কে ইতিবাচক পরিবর্তনের আশা করেছিল রাশিয়া। তখন মস্কো চেয়েছিল যে, রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর রাশিয়ার ওপর থেকে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবেন। অল্প দিনের মধ্যেই তাদের সেই মোহ কেটেছে। ট্রাম্পের শাসনামলেই রাশিয়ার ওপর সবচেয়ে বড় নিষেধাজ্ঞাটি দেওয়া হয়েছিল। গত মেয়াদের শেষদিকে তার কার্যক্রম নিয়ে অনেক মানুষ হতাশ হয়েছিল। এবারের নির্বাচনে এটা স্পষ্ট, ট্রাম্প প্রশ্নে তারা এখন ঠিক আগের অবস্থানে নেই।

সে কারণেই হয়তো আট বছর পর এবারের মার্কিন নির্বাচনের আগে কোনো রুশ রাজনীতিবিদ বা কর্মকর্তা এখন পর্যন্ত ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে জয়লাভের সম্ভাবনার বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেন নি।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দেখা গেছে ডেমোক্র্যাটপ্রার্থী কমলা হ্যারিসের প্রশংসা ও সমর্থন করতে। যদিও পুতিনের এ আচরণকে ‘ক্রেমলিন ট্রোলিং’ বা ক্রেমলিনের রসিকতা হিসেবেই ব্যাখ্যা করেছেন অনেকে।

হ্যারিসের ‘সংক্রামক হাসিকে’ পছন্দ করেন বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট; কিন্তু পুতিনের মুখে যে হাসি এখনো টিকে আছে, সেটির কৃতিত্ব যে হ্যারিসের না বরং ট্রাম্পের, সেটি সহজেই বুঝা যাচ্ছে।

কয়েক সপ্তাহ আগে রাশিয়ার একজন প্রথমসারির সংবাদ উপস্থাপককে হ্যারিসের রাজনৈতিক জ্ঞান ও সক্ষমতার বিষয়ে প্রশ্ন পর্যন্ত তুলতে দেখা গেছে। মার্কিন ডেমোক্র্যাট প্রার্থীকে তিনি রাজনীতির মাঠ ছেড়ে টিভিতে রান্নার অনুষ্ঠান করার পরামর্শ দিয়েছেন।

সব হিসাব-নিকাশের বাইরে মার্কিন নির্বাচন শেষ পর্যন্ত কতটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে যাচ্ছে, সেটি রাশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

কেননা নির্বাচন যদি তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয় এবং ট্রাম্প ও হ্যারিসের মধ্যে একজন যদি সামান্য ব্যবধানে হেরে যান, সেক্ষেত্রে দুইপক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেও রেষারেষি-বিতর্ক বেড়ে যাবে। এতে সারা দেশে নির্বাচনপরবর্তী বিশৃঙ্খলা, বিভ্রান্তি এবং সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়বে। ফলে সেগুলো ঠেকাতেই মার্কিন সরকার ব্যস্ত হয়ে পড়বে। এর ফলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বৈদেশিক নীতির বিষয়ে তাদের মনোযোগ কম থাকবে বলে মনে করেন অনেকে।

সাবেক প্রসিডেন্ট বারাক ওবামা ক্ষমতা নেওয়ার পর রুশ-মার্কিন দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর সেটির আরও অবনতি হয়। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সদ্য সাবেক রুশ রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনোভের ভাষায়, বাইডের প্রশাসনের অধিনে রুশ-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কার্যত ‘ভেঙে পড়েছে’। ওয়াশিংটন অবশ্য এর জন্য পুরোপুরিভাবে মস্কোকেই দায়ী করছে।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com