আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ড। ইসরায়েলি হামলার ভয়াবহতা ও তীব্রতার মুখে নানা সংকটের কারণে চালু রাখতে পারল না গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতালটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলার মুখে আল-শিফা হাসপাতালটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। এতে হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রোগীদের মৃত্যুর আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে আল-শিফা হাসপাতালের চিকিৎসাকর্মীদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজার উত্তরাংশে অবস্থিত এই হাসপাতালটির আশপাশে ব্যাপক লড়াই ও ইসরায়েলি হামলার কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যাহত হচ্ছে। ফলে রোগীদের চিকিৎসা কঠিন পড়েছে। এমনকি ইসরায়েলি হামলায় হাসপাতালটির একাংশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরই মধ্যে হাসপাতালটিতে ভর্তি থাকা ৩ নবজাতক মারা গেছে।
তবে ইসরায়েল জানিয়েছে, দেশটি হামাসের যোদ্ধাদের তল্লাশি করছে। ইসরায়েলিদের দাবি, এই হাসপাতালের আশপাশে এবং নিচে হামাসের একটি বড় ঘাঁটি রয়েছে। তবে ইসরায়েলের দাবির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানম ঘেব্রেইয়েসুস বলেছেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তারা আল-শিফা হাসপাতালে থাকা চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলতে পেরেছে। তারা জানিয়েছেন, হাসপাতালের আশপাশে ব্যাপক গোলাগুলি ও বোমাবর্ষণের ফলে আগে থেকেই ভয়াবহ হয়ে থাকা পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক পোস্টে বলেন, দুঃখজনকভাবে রোগীদের মারা যাওয়ার সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আল-শিফা আর এখন কোনো হাসপাতাল হিসেবে কাজ করতে পারছে না। জায়গাটি স্রেফ আশ্রয়কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। পোস্টে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।
এদিকে, অবিলম্বে গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরবসহ মুসলিম দেশগুলো। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড আত্মরক্ষার্থে–এমন যুক্তি নাকচ করে দিয়ে গতকাল শনিবার রিয়াদ থেকে এ আহ্বান জানানো হয়। আরব ও মুসলিম নেতাদের নিয়ে বিশেষ এই যৌথ শীর্ষ সম্মেলনে ফিলিস্তিন অঞ্চলে ইসরায়েলের সংঘটিত মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধ ও অপরাধের তদন্ত করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে আহ্বান জানানো হয়।
গাজায় সহিংসতা বন্ধ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করার উপায় খুঁজছে সৌদি আরব। এ দাবি আরও জোরদার করার জন্য আরব ও মুসলিম নেতাদের একত্রিত করেছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।