ঢাকা : লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ও সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান কামাল এবং সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের পাঁচ বারের সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভুঁইয়া মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তারা।
এ কে এম শাহজাহান কামালের ছোট ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের বলেন, বার্ধক্যজনিত কারণে আমার বড় ভাই শাহজাহান কামাল মারা গেছেন। আজ বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় প্রথম এবং বাদ আছর লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রবীণ রাজনীতিবিদ এ কে এম শাহজাহান কামাল প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-১১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ ও ১৮ সালে তিনি লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে প্রায় এক বছর তিনি বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও তিন মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
শাহজাহান কামাল লক্ষ্মীপুর পৌরসভার আটিয়াতলি এলাকার ফরিদ আহমেদ ও মাছুমা খাতুন দম্পতির বড় ছেলে। এ কে এম শাহজাহান কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ১৯৬৬ সালের ছয় দফা এবং ১৯৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থানে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে তিনি লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮৫ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। এছাড়া ২০০৯ সালে জনতা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। ২০১১ সালে তিনি লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
অপরদিকে, সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী উকিল আব্দুস সাত্তার ভুঁইয়ার ছেলে মাইনুল হাসান তুষার বলেন, ‘আমার বাবা দীর্ঘ দিন ধরে কিডনির অসুখে ভুগছিলেন। এক সপ্তাহ আগে তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তার চিকিৎসা চলছিল। এর মাঝেই তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন। আজ শনিবার বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদ ভবনে তার প্রথম জানাজা হবে। পরে তার মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নেওয়া হবে। সেখানে আবারও জানাজা শেষে আমাদের গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।’
আব্দুস সাত্তার ভুঁইয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতের আইনজীবী ছিলেন। তিনি দীর্ঘ দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। উকিল আব্দুস সাত্তার ভুঁইয়া ১৯৭৯ সালে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তিতে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের চার দলীয় জোট সরকারে তিনি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আব্দুস সাত্তার ভুঁইয়া আবারও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য হিসেবে জয়লাভ করেন। ২ জানুয়ারি ২০২৩ সালে তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে একই আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করে সংসদ সদস্য হন।