ছয় লেনে উন্নীত হচ্ছে ঝিনাইদহ যশোর মহাসড়ক

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৩

ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। এই জন্য প্রথম প্যাকেজের তিনটি লটে ব্যয় ধরা হয়েছে দুই হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা। উল্লেখ্য, এই মহাসড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ৪৭ কিলোমিটার। এই হিসাবে প্রতি কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ ব্যয় ৫৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

‘সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ’ সূত্রে জানা গেছে, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ‘ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কটির (এন-৭) অসামান্য প্রভাব রয়েছে। মহাসড়কটি এশিয়ান হাইওয়ে, সার্ক হাইওয়েজ করিডোর, বিমসটেক রোড করিডোর ও সাসেক রোড করিডোরের হাটিকামরুল অংশের সাথে যুক্ত। একই সাথে মহাসড়কটির যশোর অংশ বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার করিডোরের সাথে যুক্ত হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে মহাসড়কটি এতদঞ্চলের যোগাযোগের প্রধান করিডোর হওয়ায় উভয় পাশে সার্ভিস লেন-সহ মহাসড়কটি ছয় লেনে উন্নীত করা প্রয়োজন। এমতাবস্তায়, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ‘উইকেয়ার ফেজ-১’-এর আওতায় ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক উন্নয়নে পূর্ত কাজের ঠিকাদার নিয়োগের একটি প্রস্তাব আজ বুধবার অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে। মহাসড়কটির প্রায় সাড়ে ৪৭ কিলোমিটার উন্নয়নে ব্যয় হবে দুই হাজার ৬৪৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

‘সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ’ সূত্রে জানা যায়, আলোচ্য প্রস্তাবে ‘ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়কটির (এন-৭) ডব্লিউপি-০১ প্যাকেজ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত প্যাকেজটিকে তিনটি লটে (লট-১, লট-২ ও লট-৩) ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি লট আবার দুই ধাপে বিভক্ত। প্রথম ধাপে রয়েছে পূর্ত কাজ এবং দ্বিতীয় ধাপে রয়েছে নির্মাতা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সম্পাদিত পূর্ত কাজের ছয় বছর রক্ষণাবেক্ষণ। মূল প্রকল্প প্রস্তাবে প্রকল্পের পূর্ত কাজের সম্ভাব্য ব্যয়ের হিসাব প্রাক্কলন করা হলেও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এটি সরকারের রাজস্ব খাত থেকে ব্যয় করা হবে।

সূত্র জানায়, লট-১-এর সীমানা হচ্ছে- ঝিনাইদহ বাসস্ট্যান্ড থেকে কালীগঞ্জ বাজার পর্যন্ত (সাড়ে ১৫ কিলোমিটার); লট-২-এর সীমানা হচ্ছে- কালীগঞ্জ বাজার থেকে মুরাদগড় বাজার পর্যন্ত (১৫ দশমিক ৮ কিলোমিটার) এবং লট-৩-এর সীমানা হচ্ছে- মুরাদগড় বাজার থেকে যশোর চাকড়া মোড় পর্যন্ত (১৫ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার)।

ডব্লিউপি-০১ প্যাকেজের তিনটি লটের পূর্ত কাজ সম্পাদনে দরপত্র আহ্বান করা হলে ১৪টি দরপত্র জমা পড়ে। প্রাথমিক মূল্যায়নে সব ক’টি দরপত্রই রেসপনসিভ হিসেবে বিবেচিত হয়। দ্বিতীয় ধাপের মূল্যায়নে ১০টি দরদাতা প্রতিষ্ঠান যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়।

জানা গেছে, যোগ্য হিসেবে বিবেচিত ১০টি দরদাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তিনটি লটের ক্ষেত্রেই সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে বিবেচিত হয় যৌথভাবে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ‘আবদুল মোনেম লিমিটেড’ ও চীনা প্রতিষ্ঠান ‘কুয়িংদাও ট্রাফিক কনস্ট্রাকশন গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড’। কিন্তু লট-১-এ আবেদনের সাথে অভিজ্ঞতার সনদসহ দুয়েকটি ডকুমেন্ট জমা না দেয়ায় লট-১-এর পূর্ত কাজ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ঠিকাদার কোম্পানিদ্বয় অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। অন্য দিকে লট-২ ও লট-৩-এর আবেদনের সাথে চাহিদামাফিক সব ডকুমেন্ট জমা দেয়ায় ঠিকাদার কোম্পানিদ্বয়কে এ দুই লটের পূর্ত কাজের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। লট-২-এর আওতায় কালীগঞ্জ বাজার থেকে মুরাদগড় বাজার পর্যন্ত (১৫ দশমিক ৮ কিলোমিটার) সড়ক উন্নয়নে দুই ধাপে ট্যাক্স ও ভ্যাটসহ ব্যয় ধরা হয়েছে ৮০৫ কোটি চার লাখ টাকা এবং লট-৩-এর আওতায় মুরাদগড় বাজার থেকে যশোর চাকড়া মোড় পর্যন্ত (১৫ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার) সড়ক উন্নয়নে দুই ধাপে ট্যাক্স ও ভ্যাটসহ ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৫৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

সূত্র জানায়, লট-১-এর পূর্ত কাজ সম্পাদনে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতা ছিল যৌথভাবে ভারতের কেএমসি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড ও দেশীয় প্রতিষ্ঠান মোনাকো লিমিটেড। এদের প্রস্তাবিত দর ছিল ৮৪৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা; কিন্তু এদের ব্যাংক সার্টিফিকেট ভুল হওয়ায় এটিও অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়।

সূত্র জানায়, এ কারণে লট-১-এর পূর্ত কাজ সম্পাদনে তৃতীয় সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানকে মনোনীত করা হয়েছে। এরা হচ্ছে- যৌথভাবে চীনা প্রতিষ্ঠান লংজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কোম্পানি লিমিটেড ও দেশীয় প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। দুই ধাপে ট্যাক্স ও ভ্যাটসহ এদের চুক্তিমূল্য হচ্ছে ৮৮৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

প্রস্তাবটি অনুমোদিত হলে খুব শিগগিরই সড়কের কাজ শুরু করা হবে বলে জানা গেছে।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com