ক্ষমতাসীন দলের কারণে দেশ গভীর সংকটের মধ্যে পড়েছে: গণতন্ত্র মঞ্চ

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৫ জুন, ২০২৩

ঢাকা: ক্ষমতাসীন দলের কারণে দেশ গভীর সংকটের মধ্যে পড়েছে বলে মনে করেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। তাদের মতে, এই সংকট থেকে দেশকে উত্তরণ করতে হলে সরকারব্যবস্থা, শাসনব্যবস্থা, নির্বাচনব্যবস্থা এবং সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে।

রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত ‘রাজনৈতিক সংকট, চলমান গণআন্দোলন ও জনপ্রত্যাশা’—শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা।

তারা আরও বলেন, সরকার ও সরকারি দল লুটপাটে অর্জিত তাদের সীমাহীন অর্থবিত্তের নিরাপত্তার আতঙ্কে ক্ষমতা ছাড়তে ভয় পাচ্ছে। দেশে-বিদেশে কোথাও সরকারের জন্য কোনো সুখবর নেই। জবরদস্তি করে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে গিয়ে সরকার দেশের নিরাপত্তাও ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। জনগণের ঐক্যবদ্ধ গণসংগ্রামে অচিরেই এই সরকারকে বিদায় দেবে।

জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবের সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন পাটোয়ারীর সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন—বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়া, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় ফ্রন্টের সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়জুল হাকিম, গণফোরামের প্রচার ও তথ্যবিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ উল্লাহ মধুসহ অনেকে।

আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি আজকে ভয়াবহ হুমকির সম্মুখীন। এই সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিয়ে হলেও ক্ষমতায় থাকতে চায়। তাদের কাছে ক্ষমতা ছাড়া আর বড় কিছু নেই। তারা দেশকে দেখে না, ভৌগোলিক এলাকা দেখে না, গরিব মানুষ দেখে না। সরকারকে বহুদিন ধরে বলেছি, আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে সারেন্ডার করেন। তারা করে নাই। এখন আর তাদের পালাবার সুযোগ দেওয়া যাবে না। তাদের বিচার করতে হবে।

‘সময় আসন্ন। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারের বিদায়কে ত্বরান্বিত করতে হবে। আর দ্বিধা-দ্বন্দ্বের সুযোগ নেই।’

শরীফ নূরুল আম্বিয়া বলেন, ‘এই যে গভর্মেন্ট আছে ১৫ বছর ধরে, মহাজোটের গভর্মেন্ট, ১৪ দলের গভর্মেন্ট, এখন আওয়ামী লীগের গভর্মেন্ট। এই সরকারের কার্যকালের মধ্য দিয়ে পজিটিভ অনেকগুলো জিনিস আছে। কিন্তু দেশের মানুষ মোটা দাগে দুটি নেগেটিভ বিষয় এডরেস করেছে। এক. এখন জনগণ ভোট দিতে পারছে না এবং দুই. এই ১৫ বছরে দেশে দুর্নীতিবাজ এবং দুর্বৃত্তরা শক্তিশালী হয়েছে।’ এই অবস্থা থেকে পরিবর্তনে জনগণকে সম্পৃক্ত করে ‘ন্যূনতম ইস্যুতে’ ঐক্য গড়ার পাশাপাশি ‘শান্তিপূর্ণ পথে ক্ষমতা হস্তান্তর’ এর কথাও বলেন তিনি।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকার নানা কৌশলে ক্ষমতায় থেকে যেতে চায়। কিন্তু মানুষ এবার এদের বিদায় দিতে বদ্ধপরিকর।

তিনি বলেন, ‘আমরা কখনো শুধু সরকার পরিবর্তন নয়, শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের লড়াইয়েরও কথা বলেছি। আমরা গণতন্ত্র মঞ্চ সমাজটা পরিবর্তন করতে চাই।’ সরকার পতনের পর ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার’ কেমন হবে তার বিস্তারিত ব্যাখ্যাও তুলে ধরেন মান্না।

সাইফুল হক বলেন, বাইডেন-মোদি বৈঠক থেকেও এই সরকারের জন্য কোনো ভালো খবর আসেনি। সার্বিক পরিস্থিতিতে মনে হচ্ছে, ভারতও এ দেশের মানুষের বিরুদ্ধে গিয়ে ২০১৪ আর ২০১৮ সালের মতো এই সরকারকে টিকিয়ে রাখতে এগিয়ে আসবে না।

জোনায়েদ সাকি বলেন, এই সরকারের পায়ের নিচে আর মাটি নেই। গণআন্দোলনের পথে এবার এই ফ্যাসিবাদ বিদায় দিতে রাজপথে যুগপৎধারায় বিরোধী দলসমূহের ঐক্যবদ্ধ গণসংগ্রাম জোরদার করতে হবে।

শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, গণতন্ত্র মঞ্চ এই সরকারের বিরুদ্ধে আপসহীন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার এই লড়াই থেকে বিচ্যুৎ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

হাসনাত কাইয়ুম বলেন, সরকার পরিবর্তনের পাশাপাশি শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন করতে না পারলে স্বৈরতন্ত্র আবার ফিরে আসবে। সে কারণে আন্দোলনকে শেষ পর্যন্ত এগিয়ে নিতে হবে।

মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন—গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা শহীদুল্লাহ্ কায়সার, বহ্নিশিখা জামালী, সিরাজ মিয়া, হাবিবুর রহমান রিজু, বাচ্চু ভূঁইয়া, হাসিবউদ্দিন হাসিবসহ অনেকে।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com