গুজরাটে এক হাজার গ্রাম বিদ্যুৎহীন, ভেঙে পড়েছে ৫ শতাধিক গাছ

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৬ জুন, ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আরব সাগরে সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় আঘাত হেনেছে ভারতের গুজরাট উপকূলে। উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় রাজ্যটিতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড়টি। রাজ্যটিতে পাঁচ শতাধিক গাছ ভেঙে পড়েছে।

এছাড়া বিপর্যয়ের জেরে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে প্রায় এক হাজার গ্রাম। ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় এই রাজ্যটিতে আঘাত হানার পর বিপর্যয় এখন যাচ্ছে আরেক রাজ্য রাজস্থানের দিকে। শুক্রবার (১৬ জুন) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুজরাটে ‘অতি তীব্র’ ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় আঘাত হানার পর বৈদ্যুতিক খুঁটি ও গাছ উপড়ে পড়ে রাজ্যটিতে অন্তত ২২ জন আহত হয়েছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়টি রাজস্থানের দিকে এগোচ্ছে এবং সন্ধ্যা নাগাদ এটি দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।

ভারতীয় আবহাওয়া অফিস বুলেটিনে বলেছে, ‘শুক্রবার গভীর রাত আড়াইটার সময় বিপর্যয় নালিয়া থেকে ৩০ কিলোমিটার উত্তরে সৌরাষ্ট্র-কচ্ছ অঞ্চলে কেন্দ্রীভূত অবস্থায় ছিল। এটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে সরতে থাকবে এবং শুক্রবার ভোরে দুর্বল হয়ে সাইক্লোনিক স্টর্মে পরিণত হবে। এটি একইদিন সন্ধ্যায় দক্ষিণ রাজস্থানের ওপরে নিম্নচাপে পরিণত হবে।’

এদিকে গুজরাট রাজ্যে আঘাত হানার সময় প্রবল বৃষ্টির সাথে দমকা হাওয়ার সৃষ্টি হয়। রাজ্যের কর্মকর্তাদের মতে, গুজরাটের বিভিন্ন স্থানে ৫২৪ টিরও বেশি গাছ এবং বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে। একইসঙ্গে বিপর্যয়ের আঘাতের পর প্রায় ৯৪০ গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। তবে রাজ্যটিতে এখন পর্যন্ত কোনও প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।

এনডিটিভি বলছে, ১০ দিনেরও বেশি সময় ধরে আরব সাগরজুড়ে শক্তি সঞ্চয় করার পরে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুজরাটের জাখাউ বন্দরের কাছে ঘণ্টায় ১২৫ কিলোমিটার থেকে ১৪০ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ নিয়ে আছড়ে পড়ে। তবে এর কয়েক ঘণ্টা পরে শক্তি হারাতে শুরু করে ঘূর্ণিঝড়টি।

আর শুক্রবার গভীর রাত আড়াইটার সময় ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার।

ভারতীয় আবহাওয়া অফিসের প্রধান ডা. এম মহাপাত্র বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হওয়ার কারণে ১৬ এবং ১৭ জুন রাজস্থানে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

এ কারণে অস্থায়ী আবাসন কাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং উচ্চ গতির বাতাস, উচ্চ জোয়ার ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে গাছ ও ডালপালা ভেঙে পড়ার বিষয়ে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ ইতোমধ্যেই সতর্কতা জারি করেছে।

এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলের সাথে টেলিফোনে কথা বলেন এবং ঘূর্ণিঝড়ের স্থলভাগে পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেন। এসময় গির বনে সিংহ-সহ অন্য বন্য প্রাণীদের সুরক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কেও জিজ্ঞাসা করেন মোদি।

গুজরাট সরকার জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের আঘাতের আগে উপকূলীয় এবং নিচু এলাকা থেকে ৯৪ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে স্থানান্তরিত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়েছে ট্রেন পরিষেবাতেও।

এছাড়া আগামীকাল পর্যন্ত মাছ ধরার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। বন্দর বন্ধ রাখা হয়েছে এবং জাহাজ নোঙর করা হয়েছে। দেবভূমি দ্বারকার দ্বারকাধীশ মন্দির এবং গির সোমনাথ জেলার সোমনাথ মন্দির বৃহস্পতিবার ভক্তদের জন্য বন্ধ ছিল।

এর পাশাপাশি গুজরাটের জামনগর বিমানবন্দরে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুক্রবার পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জরুরি পরিস্থিতিতে বিমানবন্দর পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ডিজেল ও পেট্রোল মজুত করা হয়েছে।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com