ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। গত চার দিনে সাতজন দালালকে আটক করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রশাসন। আটক ব্যক্তিরা হলেন- মো. মাহফুজার রহমান মুন, সবুজ ভূঁইয়া, বিপুল ওরফে নাহিদ, মো. রাসেল, মো. মিজান, মো. ইউসুফ ও মোসা. ঝুনু বেগম। এদের মধ্যে আটক হওয়া মাহফুজার রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
রবিবার বিকালে ঢামেক হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে মাহফুজার রহমান (মুন), সবুজ ভূঁইয়া ও বিপুল ওরফে নাহিদকে আটক করা হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল বলেন, নতুন ভবনের মেডিপ্যাথ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তিন দালালকে আমরা আটক করি। তারা দালাল হয়েও স্টাফদের ভূমিকা পালন করেন। স্টাফরা বাধা দিলে তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তাদের উপর চড়াও হয়। পরে হাতাহাতিতে পৌঁছায়। খবর পেয়ে আনসার সদস্য ও পুলিশ তাদের তিনজনকে আটক করে প্রশাসনিক ব্লকে নিয়ে আসি।
পরিচালক জানান, এদের মধ্যে মাহফুজুর রহমান মুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সে ছাত্র হওয়ায় ঢাবি প্রক্টরের কাছে মুচলেকা নিয়ে তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। নাহিদ নামে আরও একজন শিক্ষার্থী হওয়ায় তাকেও মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সবুজ নামে আরেকজনকে শাহবাগ থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক বলেন, ‘এর আগেও আমরা গত সপ্তাহে গাইনি ওয়ার্ডে অভিযান চালিয়ে চারজনকে আটক করে শাহবাগ থানায় পুলিশের কাছে সোপর্দ করি। এছাড়া হাসপাতালে দালাল প্রবেশে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর যদি কোন গাফিলতি নেই। যদি এর কোন প্রমাণ পাই তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দালাল বিরোধী অভিযান আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।’
গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে ঢামেক হাসপাতাল থেকে দালাল চক্রের চার সদস্য আটক করে হাসপাতাল প্রশাসন। হাসপাতালের ২১২ নম্বর গাইনি ওয়ার্ডের সামনে সন্দেহভাজন ঘোরাফেরা করায় মো. রাসেল, মো. মিজান, মো. ইউসুফ এবং মোসা. ঝুনু বেগম নামের চার দালালকে আটক করে শাহবাগ থানা পুলিশে দেওয়া হয়।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, ‘আমাদের কাছে অভিযোগ ছিল পুরাতন ভবনের গাইনি বিভাগের ২১২ নম্বর ওয়ার্ডে দালাল চক্রের দৌরাত্ম ব্যাপক হারে বেড়েছে। তারা সাধারণ রোগীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা আদায়সহ রোগীদের ভাগিয়ে নিচ্ছে। ফলে প্রতিনিয়ত রোগীরা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে চার দালালকে আটক করা হয়।’
‘এ সময় তারা হাসপাতালের কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। অহেতুক অবৈধভাবে ঘোরাফেরা করছিল। বিষয়টি আমাদের কাছে সন্দেহ হওয়ায় আমরা তাদেরকে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।’ বলেন পরিচালক।