একজন নারীর কাছে আ.লীগ হেরে গেছে: রিজভী

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৭ মে, ২০২৩

ঢাকা : সম্প্রতি গাজীপুর সিটি নির্বাচনে একজন থ্রি-ফোর পাস করা নারীর কাছে আওয়ামী লীগ ফেল করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বলেন, ‘আসলেই এই নির্বাচন সরকারের ভেলকি বাজি ছাড়া কিছুই নয়। জেলায় জেলায় সাধারণ মানুষ তার (শেখ হাসিনার) পতনসহ নানা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে। কিন্তু সেই আন্দোলন আওয়ামী লীগ শুনতে পায় না। কারণ তাদের কানে সিসা ঢোকানো।’

শনিবার বিকালে যশোর শহরের ভোলা ট্যাংক রোডে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এসব বলেন। নেতাকর্মীদের নির্যাতনসহ সরকার পদত্যাগের ১০ দফা দাবিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জনসভার আয়োজন করে যশোর জেলা বিএনপি

রিজভী বলেন, ৫৪ শতাংশ ভোটার কেন্দ্রে যায়নি। সুষ্ঠু নির্বাচনের নামে সরকার নির্বাচনের টোপ দেওয়ার চেষ্টা করছে। শেখ হাসিনা গায়ের জোরে তার প্রশাসন দিয়ে এখনো ক্ষমতায় রয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নয়, একমাত্র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতেই নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। সুষ্ঠু ভোট হলে আর ক্ষমতায় যেতে পারবে না আওয়ামী লীগ। তাই আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে চায় না।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরাতো শেখ হাসিনার আমলে আছি। এই আমলে বাড়ি আর কারাগারের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। পুলিশ রাতে বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে, নির্বিঘ্নে সাধারণ মানুষ চলাচল করতে পারছে না। বিএনপির নেতাকর্মীরা সব সময় পুলিশের নজরদারির মধ্যে রয়েছে। মুক্ত পরিবেশে বাইরে থাকলেও আমরা চার দেয়ালের মধ্যে কারাগারেই বন্দী রয়েছি।

নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম বৃদ্ধির সমালোচনা করে তিনি বলেন, আলোর গতির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে। সরকার একের পর এক দেশ ভিজিট করছে, দেশে ফিরে এসে তিনি উন্নয়নের গল্প শোনান। ৯০০ টাকায় গরুর মাংস খেতে হচ্ছে, চিনি তো পাওয়াই যাচ্ছে না। চিনির যে অবস্থা বাংলাদেশে চিনি বিদেশিনী গানের মতো হয়ে গেছে। যেখানে মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে পারছে না সেখানে এত উন্নয়নের গল্প কিসের! সরকার উন্নয়নের নামে দেশের মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে।

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের কানে সিসা ঢোকানো রয়েছে। দেশের জনগণ শেখ হাসিনাকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তাই সাধারণ মানুষকে নিয়ে বিএনপি যখন আন্দোলন করছে তখন প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ বিএনপির কর্মসূচিতে সন্ত্রাসী হামলা করছে। তারা জানে একটা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে পারলে শেখ হাসিনার ক্ষমতায় টিকা কঠিন হয়ে পড়বে। এই সরকার জগদ্দল পাথরের মতো চেপে রয়েছে। তারা জুলুম করে শাসন করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। আওয়ামী লীগের গুন্ডা সন্ত্রাসী দল দিয়ে তারা এ দেশ শাসনের সঙ্গে সকল অপকর্মও করে যাচ্ছে। এই সন্ত্রাসী দল না হটা পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকবোই। আমাদের যে লক্ষ্য দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার, সেই লক্ষ্যে অটুট থাকব।

যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগমের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, কেন্দ্রীয় নেতা জাহানারা সিদ্দিকী, সাবিরা নাজমুল মুন্নী, জেলা বিএনপির মোস্তাফিজুর রহমান, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইসহাক, মোহাম্মদ মুসা, আব্দুস সালাম আজাদ, সাবেরুল হক সাবু প্রমুখ। সমাবেশে যশোরের আট উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী জেলা সাতক্ষীরা, নড়াইল, ঝিনাইদহ, মাগুরাসহ খুলনা বিভাগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকাল থেকেই যশোরের আট উপজেলা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে দলের নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে জড়ো হন। মিছিলে থাকা অনেক নেতাকর্মীর হাতে বাঁশের মাথায় দলীয় পতাকা বেঁধে রাখতে দেখা যায়। মিছিলে নিয়ে আসা বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের অনেকের হাতেই আড়াই-তিন হাত লম্বা বাঁশের মাথায় পতাকা বেঁধে রাখতে দেখা গেছে। মাঠে সমাবেশের অনুমতি না পেয়ে শহরের ভোলা ট্যাংক সড়কের ওপর সমাবেশের আয়োজন করায় ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সড়কের দুই মাথায় নেতা-কর্মীরা দাঁড়িয়ে যানবাহন অন্য সড়কে ঘুরিয়ে দেয়।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com