ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তাই আজকে তার একমাত্র শত্রু। সেজন্যই বিএনপি চৌদ্দ বছর পরে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে কিন্তু জনগনের সাড়া না পেয়ে তারা এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে যে জননেত্রী তাকে স্তব্ধ করে দিতে হবে।
মঙ্গলবার (২৩ মে) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে নগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির জেলা আহবায়কের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে ঝড় বয়ে গেছে, সারাদেশ গর্জন করে উঠেছে। শেখ হাসিনাকে কটূক্তি, হত্যার হুমকি দেয়ায় বাংলাদেশের মানুষ অবাক হলো। প্রকাশ্য দিবালোকে রাজশাহীর পুঠিয়ায় জেলা আহ্বায়ক হত্যার হুমকি দেওয়ার দুইদিন চলে গেলো কিন্তু মির্জা ফখরুল একটা কথাও বললেন না। বিএনপির কোনো সিনিয়র নেতা একটা কথাও বললেন না।
তিনি যোগ করেন, সবাই নিরব হয়ে আছেন, তাই আজকে প্রশ্ন জাগে, এটা তার (চাঁদ) এক দফা নয়, এটা বিএনপির এক দফা। শেখ হাসিনাকে হত্যার মিশন নিয়ে তারা মাঠে নেমেছে। তাদের এক দফা শেখ হাসিনাকে হত্যা করা। এই ষড়যন্ত্র নিয়ে তারা আজকে মাঠে নেমেছে।
মির্জা ফখরুলকে তিনি প্রশ্ন করেন, আমাদের পার্টির কোনো জেলার নেতা যদি খালেদা জিয়াকে হত্যা করার হুমকি দিত, তাহলে আপনারা কি করতেন? কি জবাব দিতেন, আমি জানতে চাই।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে হত্যা করে আপনারা বাংলাদেশকে আপনাদের সেই ষড়যন্ত্রের, জঙ্গিবাদ-সাম্প্রদায়িকতার লীলাভূমিতে পরিণত করবেন, অস্ত্রপাচার-লুটপাট, গণতন্ত্রের হত্যার জন্য এই শ্যামল বাংলাদেশকে আফগানিস্তান-পাকিস্তান বানানোর যে দুঃস্বপ্ন দেখছেন, তার পথের বাধা শেখ হাসিনা, তাকে হত্যা করে দেশকে আপনারা স্বপ্নের আফগানিস্তান বাস্তবায়ন করতে চান।
তিনি আরো বলেন, গত চব্বিশ ঘণ্টায় সারাদেশের মানুষ বুঝিয়েছে পঁচাত্তর আর ২০২৩ এক নয়। বিএনপির উপলব্ধি করা উচিত, রাজশাহীর এক নেতা হুমকি দেয়ায় সারাদেশ গর্জন করে উঠেছে। শেখ হাসিনার উপর হামলা করলে আওয়ামী লীগ কর্মীরা চুপ করে বসে থাকবে না।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন। তারা নির্বাচন চায় না। তারা চায় সংঘাত, অস্থিরতা, অশান্তি, রক্তপাত। আমরা চাই নির্বাচন- বাংলাদেশের জনকণ্ঠকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে। আমরা নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই।
তিনি আরো বলেন, আমরা কারো সঙ্গে সংঘাত-পাল্টা সংঘাতে যাবো না। আমরা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করবো এই অপশক্তিকে। এই অপশক্তিকে বাংলার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর বার্তা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, কাতারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার আগে নেত্রী বলে গেছেন, কোনো সংঘাতে যাওয়া যাবে না। আমরা সংঘাতে যাবো না, কিন্তু সংঘাত কেউ করতে আসলে আমরা চুপ করে বসে থাকবো? আমাদের উপর যদি কেউ হামলা চালায়, তাহলে আমরা হামলা চালাবো না? হামলা করলে তার সমুচিত জবাব কিভাবে দিতে হয় তা আওয়ামী লীগ জানে।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কথায় কথায় আপনারা মাথা গরম করবেন না। ঠাণ্ডা মাথায় এই অপশক্তিকে বাংলাদেশের জনগণ রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন করবে। যদি কেউ নির্বাচন প্রতিরোধ করতে আসে, আমরা সর্বশক্তি দিয়ে, জনগণকে নিয়ে প্রতিরোধ করবো।
বিদেশিদের নির্বাচন দেখতে আসার অনুরোধ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে সারা বিশ্ব তাকিয়ে আছে। আমি সরকারি দলের সেক্রেটারি বলছি, দুই দিন পর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন, এই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হবে। এই নির্বাচনে সরকারি দল নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না। গাজীপুর সিটি নির্বাচন হয় সকল সিটি নির্বাচন এবং আগামীতে জাতীয় নির্বাচন ফ্রি এন্ড ফেয়ার হবে। আমরা বিদেশিদের অনুরোধ করবো, আপনারা আসুন এবং দেখুন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কিভাবে ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন হবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আপনি একা নন, বাংলাদেশের জনগণ আপনার সাথে আছে। সমগ্র বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের শত শত কর্মী বিপদে আপদে শত দুর্যোগে আপনার সাথে আছে।
নগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য অ্যাড. কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, নগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবিরসহ মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।