আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিরোধী জোটের প্রার্থী থেকে পিছিয়ে আছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। জনমত জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে। এদিকে নির্বাচনের মাত্র তিন দিন আগে হোমল্যান্ড পার্টির মুহাররেম ইনচে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোয় এরদোয়ার প্রবল চাপে পড়লেন। তার এই সরে দাঁড়ানোয় এরদোয়ানের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী কেমাল কিলিচদারোগলুর অবস্থান আরো শক্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আগামী রোববার (১৪ মে) তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশটির ইতিহাসে এই নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
মুহাররেম ইনচে সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশের জন্য আমি আমার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও শেষ সময় হওয়ায় ব্যালটে তার প্রার্থীতা থাকছে।
এক বিবৃতিতে মুহাররেম বলেন, ‘তুরস্ক আমার সম্মান রক্ষা করতে পারেনি। একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর সুনাম থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ।’
কোনো জোটের বাইরে একমাত্র প্রার্থী ছিলেন ৫৯ বছর বয়সী মুহাররেম। নিজের হোমল্যান্ড পার্টিকে রাজনীতিতে ‘তৃতীয় শক্তি’ বলে দাবি করতেন তিনি। মুহাররেম বলেন, ‘তুরস্কের ভবিষ্যতের জন্য হোমল্যান্ড পার্টির প্রয়োজনীয়তা আছে। অবশ্য দলটি পার্লামেন্টে থাকবে। আমি প্রত্যেক পরিবার থেকে হোমল্যান্ড পার্টির জন্য ভোট চাই।’
বিরোধী জোটের সমালোচনা করেছেন মুহাররেম। তিনি বলেন, ‘যদি তারা (বিরোধী জোট) নির্বাচনে হেরে যায়, তখন আমাদের ওপর দায় চাপাবে। তাদের কোনো অজুহাত দেখানোর সুযোগ দেওয়া উচিত হবে না।’
মুহাররেম সরে দাঁড়ানোয় প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) নেতা কেমাল কিলিচদারোগলুর ভোট আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি বিরোধী ছয়দলীয় জোটের প্রার্থী। জোটের বাইরের বিভিন্ন দলেরও সমর্থন পেয়েছেন কিলিচদারোগলু।
মুহাররেম সরে দাঁড়ানোর পর এক টুইটে কিলিচদারোগলু দৃশ্যত তাঁকে নিজের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার আহ্বান এখনো বহাল আছে। আসুন, পুরোনো ক্ষোভ ও বিরোধ ভুলে যাই। ইনচেকে তুরস্কের জোটে আমরা স্বাগত জানাই। অনুগ্রহ করে আসুন।’
আঙ্কারায় এক সমাবেশে মুহাররেমের প্রার্থিতা প্রত্যাহার নিয়ে কথা বলেছেন এরদোয়ান। তিনি বলেন, ‘একজন প্রার্থী সরে দাঁড়িয়েছেন। আসলে আমি মর্মাহত। আমি অবাক; কী এমন ঘটল আমি জানি না।’
তুরস্কের স্বনামধন্য জরিপ সংস্থা কোনডা’র তথ্য অনুযায়ী, রোববারের নির্বাচনের আগে ৬ মে চালানো সর্বশেষ জরিপে মুহাররেমের প্রতি সমর্থন ছিল ২ দশমিক ২ শতাংশ। কিলিচদারোগলু ৪৯ দশমিক ৩ শতাংশ সমর্থন নিয়ে শীর্ষে আছেন। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা এরদোয়ানের প্রতি সমর্থন রয়েছে ৪৩ দশমিক ৭ শতাংশ ভোটারের। চতুর্থ প্রার্থী সিনান ওগানের প্রতি সমর্থন আছে ৪ দশমিক ৮ শতাংশের।
কোনডা’র জরিপ অনুযায়ী, মুহাররেম ও ওগানের সমর্থকদের দ্বিতীয় দফার ভোটে পছন্দের প্রার্থী কিলিচদারোগলু। প্রথম দফায় কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে দুই সপ্তাহ পর শীর্ষস্থানীয় দুই প্রার্থীর মধ্যে দ্বিতীয় দফায় ভোট হবে।