ঢাকা : ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেছেন, এ বছর ৯ বার সময় বাড়ানো হয়েছে। তারপরও কিছু কোটা বাকি রয়েছে। এখন হাতে আর কোনো সময় নেই। তাই কোটা পূরণ না হলেও এ বছর হজ নিবন্ধনের সময় আর বাড়ছে না।
আজ বুধবার (২৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে ‘ই-হজ মোবাইল অ্যাপ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। এই অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব মুসলিম দেশগুলোর ওপর পড়েছে। ফলে পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভারত থেকেও হজযাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে। সেক্ষেত্রে হজযাত্রীর সংখ্যা তুলনা করলে বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের চেয়ে ভালো। হজ শেষ হলে আপনারা দেখতে পারবেন অন্যান্য দেশ কতসংখ্যক হজ কোটা ফেরত দিয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের আর্থিক সক্ষমতা ভালো হওয়ায় ১ লাখ ২০ হাজারের মতো হজযাত্রী চূড়ান্ত নিবন্ধন করেছেন।
ফরিদুল হক খান বলেন, হজ পালনে হজযাত্রীদের সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিত করাই আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য। সে লক্ষ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয় হজযাত্রী এবং ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত অংশীজনের জন্য হজ পালনসহ ধর্মীয় ও অন্যান্য বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে ‘ই-হজ মোবাইল অ্যাপ’ এবং ‘হজ ও উমরাহ সহায়ক প্রকাশনার উদ্যোগ স্মার্ট হজ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে একটি চমৎকার উদ্যোগ।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘হজ ব্যবস্থাপনায় আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করছি। হজ এজেন্সিগুলো প্রযুক্তিগত সেবা দিতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করেছে। ফলে অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের প্রত্যাশিত উন্নয়ন হয়েছে। গত ১৪ বছরে হজ ব্যবস্থাপনায় যে উন্নতি হয়েছে তা দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হচ্ছে।’
ফরিদুল হক খান বলেন, প্রাথমিকভাবে প্রাক-নিবন্ধন ও নিবন্ধন রিফান্ড, নিবন্ধন ও নিবন্ধন রিফান্ড আবেদন সিস্টেমের মাধ্যমে করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন তথ্য এখানে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। ফলে হজযাত্রীরা এই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ঘরে বসেই ভাউচার তৈরি করতে পারবেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগের বছরের হজ কার্যক্রম শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরবর্তী বছরের হজের প্রস্তুতি শুরু হয়। অর্থাৎ মন্ত্রণালয় সারা বছর ধরেই প্রস্তুতি গ্রহণ করে থাকে। রাজকীয় সৌদি সরকারের দিক নির্দেশনা অনুসরণ করে পরিবর্তিত নিয়মনীতির আলোকে প্রস্তুতি চলতে থাকে। এ ধারাবাহিকতায় দেশের মধ্যে অনেকগুলো মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে একটি সফল, নিরাপদ ও সুন্দর হজ ব্যবস্থাপনা উপহার দিতে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় তার করণীয় পর্যায়ক্রমে সুন্দরভাবে সম্পাদন করে চলছে।
হজের সব তথ্য মিলবে এক অ্যাপে। এখন থেকে একজন হজযাত্রীর প্রাক-নিবন্ধন, নিবন্ধন, হজযাত্রীদের স্বাস্থ্যসেবা, টিকা, চিকিৎসা সেবা দেওয়া, আবাসন ব্যবস্থার তথ্য, লাগেজ ব্যবস্থাপনা, হারানো হজযাত্রী খুঁজে পাওয়াসহ যাবতীয় সেবা কার্যক্রম -এ মিলবে।
আগামীতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতা নিয়ে অনলাইনে প্রাক-নিবন্ধন ও নিবন্ধনের আর্থিক লেনদেন সংযোগের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ ছাড়া বর্তমানে ই-হজ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন সেবাও পর্যায়ক্রমে মোবাইল অ্যাপটিতে সংযুক্ত করা হবে।
হজ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা এবং হজ এজেন্সির ইউজারদের জন্য ই-হজ ব্যবস্থাপনার কাজগুলো পর্যায়ক্রমে অ্যাপটিতে সংযুক্ত করা হবে।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব (হজ) মো. মতিউল ইসলাম, হজ অফিসের পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম, হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম।