নিজস্ব প্রতিবেদক : ইউনাইটেড হাসপাতালের বর্ধিতাংশ সরকারী জায়গার উপর নির্মিত এবং রাজউক হতে অনুমোদন নেই। ইউনাইটেড হাসপাতালের মালিক (অধিকাংশ শেয়ার হোল্ডার) ইউনাইটেড গ্রুপ। ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান, ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈন উদ্দিন হাসান রশিদ, ইউনাইটেড হাসপাতালের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রাজার অবৈধ কার্যক্রমে সরকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
তাদের বেপরোয়া কার্যক্রমে হাতপাতাল ব্যবস্থাপনা ভেঙ্গে পড়েছে। রাজউক-এর অথোরাইজড কর্মকর্তা মোঃ ইমরুল হাসান এই প্রতিবেদকে বলেন, এ বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি আরোও বলেন মানব সৃষ্ট বিভিন্ন দুর্ঘটনার কারনে সরকার এ ব্যাপারে ভীষণ সজাগ এবং রাজউক বিশেষ কমিটি গঠনের মাধ্যমে ত্রুটিপূর্ণ স্থাপনা সনাক্তকরনের মাধ্যমে ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করা হলেও ভবনের ভিতরে রাজউকের কোন নিয়ম মানা হয়নি।
ইউনাইটেড হাসপাতালের ভবন নির্মানে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে। কন্টিনেন্টাল হাসপাতালের নামে রাজউক কর্তৃক অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী নির্মানের কথা থাকলেও বর্তমানে নির্মিত ভবন ও অবকাঠামোর মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। হাসপাতালের বর্ধিতাংশের উপর জেনারেটর রুম, ক্যাফেটেরিয়া ও আন্ডার গ্রাউন্ড বেইজমেন্ট নকশাবিহীন সরকারি জায়গার উপর নির্মিত। মূলত কন্টিনেন্টাল হাসপাতালের নামে রাজউক থেকে নকশার অনুমোদন নিলেও ইউনাইটেড হাসপাতালের নামে কোন নকশার অনুমোদন নেওয়া হয়নি।
২০০৬ সালে ইউনাইটেড হাসপাতাল লিঃ প্রতিষ্ঠা হলেও একবার ঢাকা উত্তর সিটিকর্পোরেশন থেকে ট্রেড লাইসেন্স করলেও তারপর থেকে আজ অবধি লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি। হোল্ডিং ট্যাক্স এর বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটিকর্পোরেশন গুলশান জোনের উপকর কর্মকর্তা শাহেদ জোহার বলেন, মামলা চলমান থাকায় ২০০৬ সাল থেকে ইউনাইটেড হাসপাতালের হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়েনি ও কমেনি। এ কারনে হোল্ডিং ট্যাক্স ফাঁকি দিচ্ছে। এ সকল অনিয়মের মধ্যেই চলছে এই নামী-দামী হাসপাতালের কার্যক্রম।রহস্যজনক কারনে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মঈন উদ্দিন হাসান রশিদ ও হাসান মাহমুদ রাজা সরকারকে কোটি কোটি টাকার হোল্ডিং ট্যাক্স ও রাজস্ব থেকে ফাঁকি দিচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে ঢাকা উত্তর সিটিকর্পোরেশন ইউনাইটেড হাসপাতালের বর্ধিত অংশে বুলডোজ চালিয়ে ভেঙ্গে দিলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা পুনঃরায় আবার নির্মাণ করে হাসপাতালের কার্যক্রম চালাচ্ছে।
হাসপাতালের অব্যবস্থাপনার কারণে ইতোমধ্যে গালফ এয়ার লাইনের ইউসুফ হাসান আল হিন্দির নামক একজন পাইলটকে ভুল চিকিৎসা দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। ঢাকায় তার মৃত্যুর কারন তদন্ত চলছে। উল্লেখ্য ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে মৃত্যুর তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে পাইলটের পরিবার। গত ১৪ই মার্চ ২০২৩ আদালতে মামলা করলে তা পুলিশ ইনভেষ্টিগেশনকে (পিআইবি) তদন্ত ভার দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে ইউনাইটেড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ ফাইজুর রহমানকে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি। ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও তার কোন উত্তর পাওয়া যায়নি। তারপর মঈন উদ্দিন হাসান রশিদ কে ফোন করা হলে এ ব্যপারে তার কোন বক্তব্য নেই বলে জানান তিনি।