গার্মেন্ট শ্রমিকদের সুরক্ষায় ৫০ ইউনিয়নের যৌথ বিবৃতি

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১

ঢাকা : করোনা মহামারির মধ্যে অনিশ্চিত অবস্থার মধ্যে কাজে যোগ দেন বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার গার্মেন্ট শ্রমিকরা। তাই তাদেরকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য দুই দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কমপক্ষে ৫০টি শ্রম অধিকার বিষয়ক গ্রুপ। এ বিষয়ে তারা একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে।

এ খবর দিয়েছে অনলাইন ক্লিন ক্লোথস। এসব অধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশের একতা গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশন, বাংলাদেশ সেন্টার ফর ওয়ার্কার্স সলিডারিটি, বাংলাদেশ গার্মেন্ট অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশন, বাংলাদেশ মুক্ত গার্মেন্ট শ্রমিক ইউনিয়ন ফেডারেশন, বাংলাদেশ রেভ্যুলুশনারি গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি ফেডারেশন/গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স সলিডারিটি ফেডারেশন, ন্যাশনাল গার্মেন্ট ওয়ার্কার্স ফেডারেশন। এ ছাড়া এতে স্বাক্ষর করেছেন শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি, ইতালি, তুরস্ক, নেদারল্যান্ড, মলদোভা, আয়ারল্যান্ড, জার্মানি, বৃটেন, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন দেশের শ্রমিক সংগঠন।

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমান করোনার ঢেউ এবং দক্ষিণ এশিয়ায় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ছে। এতে বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কায় বৃদ্ধি পাচ্ছে অসুস্থতা এবং মৃত্যু।

আগস্টে বাংলাদেশে করোনা পজেটিভের হার ছিল শতকরা ২০ ভাগ। এ ছাড়া ওই মাসেই বাংলাদেশে একদিনে মৃত্যুর সর্বোচ্চ রেকর্ড গড়ে। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কায় সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার দ্বিগুন হয়। এই দুটি দেশই গার্মেন্টস বা তৈরি পোশাকের গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানিকারক।

তবে এসব পোশাক কারখানায় যেসব শ্রমিক কাজ করেন তাদের চিকিৎসা সুবিধা বা টিকা পাওয়ার সুযোগ কমই। ফলে তাদেরকে সাপোর্ট না করলে বড় রকম অসুস্থতায় ভুগতে পারেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, করোনার লকডাউনের সময় এসব শ্রমিককে অত্যাবশ্যকীয় কর্মী হিসেবে বিধিনিষেধের বাইরে রাখা হয়। দুই দেশের সরকারই এটা করেছে অর্থনৈতিক কারণে। ফলে তারা জনাকীর্ণ কারখানাগুলোতে কাজে যোগ দিতে বাধ্য হয়েছেন, যেখানে এই ভাইরাস সহজেই বিস্তার লাভ করতে পারে।

করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে শ্রম ইউনিয়ন এবং আন্তর্জাতিক শ্রম বিষয়ক সংস্থাগুলোর অব্যাহত আহ্বান সত্ত্বেও দেশ দুটির সরকার বা স্থানীয় পর্যায়ে কারখানার ম্যানেজার অথবা আন্তর্জাতিক পোশাকের ব্রান্ডগুলো- যারা বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা থেকে পোশাক আমদানি করে- তারা কেউই শ্রমিকের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা, সামাজিক কর্মসূচি পর্যাপ্ত আকারে হাতে নেয়নি। এতে আরো বলা হয়, প্রয়োজনীয় পিপিই ছাড়া, সামাজিক পর্যাপ্ত দূরত্ব বজায় না রাখা, ন্যূনতম পরীক্ষা ও অন্যান্য অসামঞ্জস্যতার ফলে এসব শ্রমিকের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার অগ্রাধিকার ব্যর্থ হচ্ছে।

ফলে শ্রমিকদেরকে জীবন এবং দরিদ্রতার মধ্যে অপশন খুঁজে নিতে হচ্ছে। এসব শ্রমিকের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা সরকারের প্রতি বেশ কিছু সুপারিশ উত্থাপন করেছে তারা।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, করোনা থেকে নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে লক ডাউনের আওতায় আনতে হবে গার্মেন্ট শিল্পকে। গার্মেন্ট শ্রমিকদের টিকাদান এবং পরীক্ষা বাড়াতে হবে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেলথ বাস্তবায়ন করতে হবে।

বিশেষভাবে নজর দিতে হবে পিপিই, সামাজিক দূরত্ব, পরিবহন ব্যবস্থায়। যেসব শ্রমিক করোনার বিধিনিষেধের কারণে কাজে যোগ দিতে পারেননি বা তাদেরকে কাজে যোগ দেয়া থেকে বিরত রাখা হয়েছে, তাদেরকে পূর্ণাঙ্গ বেতন দিতে হবে। অনিরাপদ কাজ স্বেচ্ছায় প্রত্যাখ্যানের অনুমতি দিতে হবে শ্রমিকদের।

বিবৃতিতে আরো স্বাক্ষর করেছে অস্ট্রিয়ার আরগি ওয়েল্টলাডেন, ইতালির ক্যাম্পেগনা আবিতি পুলিটি, ক্লিন ক্লোথস ক্যাম্পইন অস্ট্রিয়া, সেন্টার ফর পলিসিজ, ইনিশিয়েটিভস অ্যান্ড রিসার্স প্লাটফরমা, ক্লিন ক্লোথস ক্যাম্পেইন টার্কি, সিএনভি ইন্টারন্যাশনাল নেদারল্যান্ডস প্রভৃতি।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com