স্পোর্টস ডেস্ক : আর্জেন্টিনাকে প্রথম বিশ্বকাপ এনে দেন ড্যানিয়েল প্যাসারেলা ১৯৭৮ সালে। এরপর ৮৬’তে ম্যারাডোনার জাদু। ৩ যুগ পর আলবিসেস্তেদের শিরোপা উৎসবে ভাসালেন লিওনেল মেসি। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক হিসেবে নিজের নাম লেখালেন সর্বকালের অন্যতম সেরা এ ফুটবলার।
কত বিদ্রুপ কত উপহাস মন ভেঙেছে কত লক্ষ-কোটি হৃদয়ের। চাপা কান্না আর হতাশার স্তব্ধতা ভেঙেছে এক উৎসবের রাতে। দিন, মাস, বছর পেড়িয়ে ৩ যুগের অপেক্ষা কি কম? হতে হতেও যেন হচ্ছিলো না বারবার। এই ট্রফিটির যেন রহস্যের শেষ নেই! তাই তো হাতে তুলে দেবার আগেই চুমু এঁকে দিলেন লিওনেল মেসি, মনে মনে হয়তো বললেন, আমি পাইলাম, আমি ইহাকে পাইলাম।
তবে এর চাইতেও দীর্ঘ অপেক্ষা করেছে আলবিসেলেস্তেরা। প্রথম শিরোপার স্বাদ পায় বিশ্বকাপ শুরুর ৪৮ বছর পর ১৯৭৮ সালে। আর্জেন্টিনার জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে ইয়োহান ক্রুইফ, পল ব্রাইটনারের মতো তারকারা নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে।
বিশ্বজুড়ে সমালোচনা আর রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আর্জেন্টিনা যখন ধুঁকছে ঠিক তখন দেশটিতে উৎসবের উপলক্ষ্য এনে দেন ড্যানিয়েল প্যাসারেলা। বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা এ সেন্টারব্যাকের চৌকস নেতৃত্ব আর মারিও কেম্পেসের জাদুতে ফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে হারায় আর্জেন্টিনা।
পরেরবার ধরা দিয়েছে মাত্র এক বিশ্বকাপ ব্যবধানে। যে আসর অলংকৃত শুধু একজনের নামে। দিয়াগো আরমান্দো ম্যারাডোনা। সেবার একক নৈপূণ্যে আর্জেটিনাকে শিরোপা এনে দেন ফুটবল ঈশ্বর। মেক্সিকোর স্তাদিও আজতেকার গ্যালারীতে থাকা প্রায় সোয়া এক লাখ দর্শক দেখেছে ম্যারাডোনার গোল অব দ্য সেঞ্চুরি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সে ম্যাচেই হ্যান্ড অব গড গোলটি করেন সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার।
এরপর কত বিশ্বকাপ এসেছে চলেও গেছে। কিন্তু অধরা ট্রফি ধরা দিচ্ছিল না। বারবার শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে। এমনকি হাত ছোঁয়া দূর থেকেও ছুঁয়ে দেখা যায়নি। তবে এবার আর খালি হাতে নয়। একদল অদম্য সাহসী যোদ্ধা পেয়ে শতভাগ নিংড়ে দিয়েছেন এলএমটেন। গোল করেছেন, গোল করিয়েছেন, প্রতিপক্ষকে কেটে ছিঁড়ে ফেলেছেন। সিংহাসনে নতুন রাজা হয়ে এসেছেন। আর সোনালি ট্রফিটাও পেয়েছে সেরাদের সেরার স্পর্শ।