১৬ দিনে রেমিট্যান্স ৯৬ কোটি ডলার, ঈদের প্রভাব নেই প্রবাস আয়ে

আমাদের সময় ডেস্ক
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২১ জুন, ২০২২

ঢাকা : দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির অন্যতম বৃহৎ উৎস প্রবাস আয়। তাই প্রবাস আয় বা রেমিট্যান্স বাড়াতে সরকার প্রণোদনাসহ নানা ছাড় দিচ্ছে। কিন্তু তাতেও রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়ছে না। এমনকি আসছে ঈদ ঘিরে প্রত্যাশিত আয় আসছে না।

চলতি জুনের প্রথম ১৬ দিনে ৯৬ কোটি ৪১ লাখ (৯৬৪ মিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে। দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি ডলার ৯৩ টাকা ধরে) যার পরিমাণ আট হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা। চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে মাসের শেষে প্রবাস আয়ের পরিমাণ ১৮০ কোটি ডলার হবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকের চেয়ে খোলাবাজারে ডলারের দামের ব্যবধান বেশি থাকলে বৈধ চ্যানেলের চেয়ে হুন্ডিতে রেমিট্যান্স বেশি আসে। বর্তমানে এক ডলার রেমিট্যান্সের বিপরীতে ব্যাংক ৯৩-৯৪ টাকা দিচ্ছে। সঙ্গে যোগ হচ্ছে সরকারের আড়াই শতাংশ প্রণোদনা। সব মিলিয়ে গ্রাহক ৯৫ থেকে ৯৬ টাকা পান।

কিন্তু খোলাবাজারে ডলার ৯৭ থেকে ৯৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এর মানে ব্যাংকিং চ্যানেলের চেয়ে ভিন্ন পথে রেমিট্যান্স এলে বেশি টাকা পাওয়া যাচ্ছে। যার কারণে বৈধ পথে রেমিট্যান্সপ্রবাহ কম। তাই ব্যাংকের সঙ্গে খোলাবাজারের ডলারের রেটের ব্যবধান না কমলে প্রবাস আয় বাড়ানো কঠিন হবে।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলছেন, ‘সব সময় ঈদের আগে বেশি রেমিট্যান্স আসে। সামনে কোরবানির ঈদ। আশা করছি প্রবাস আয়ের প্রবাহ বাড়বে। ’

এদিকে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়াতে ব্যাংকারদের সঙ্গে আলোচনা করে মাসের শুরুতে মার্কিন ডলারের রেট বাণিজ্যিক ব্যাংকের হাতে ছেড়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন প্রতিযোগিতামূলক দর নির্ধারণ করছে ব্যাংকগুলো।

এর আগে অবাধে যত খুশি তত রেমিট্যান্স পাঠানোর পথ সহজ করে দিয়ে গত ২৩ মে সার্কুলার জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে এখন পাঁচ হাজার ডলারের ওপর বা পাঁচ লাখ টাকার বেশি রেমিট্যান্স এলেও কোনো কাগজপত্র ছাড়াই প্রণোদনা পাচ্ছেন প্রবাসীরা। আগে পাঁচ হাজার ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠাতে বৈধ কাগজপত্র জমা দেওয়া বাধ্যবাধকতা ছিল।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য বলছে, জুনের প্রথম ১৬ দিনে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৭৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫১ লাখ মার্কিন ডলার। আর বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে এক কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার।

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) দেশে রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ৯১৯ কোটি ৪৪ লাখ ডলার; বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ এক লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার, আগস্টে ১৮১ কোটি, সেপ্টেম্বরে ১৭২ কোটি ৬৭ লাখ, অক্টোবরে ১৬৪ কোটি ৬৮ লাখ, নভেম্বরে ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ, ডিসেম্বরে ১৬৩ কোটি এবং জানুয়ারিতে এসেছে ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। ফেব্রুয়ারিতে আসে ১৪৯ কোটি ৪৪ লাখ, মার্চে পাঠিয়েছিল ১৮৫ কোটি ৯৭ লাখ, এপ্রিলে ২০১ কোটি আট লাখ এবং মে মাসে ১৮৮ কোটি ৫৪ লাখ ডলার এসেছে।

এই পোস্ট টি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও সংবাদ
© All rights reserved © 2023 amadersomoy.net
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com