ঢাকা : প্রতারণা ও সাটির্ফিকেট জালিয়াতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতারক ইকবাল মাহমুদ চৌধুরী বিরুদ্ধে। এমকি নিজেও জাল সাটিফিকেট দিয়ে হামদর্দ ল্যাবরেটরীজ (ওয়াকফ) বাংলাদেশে পরিচালক পদে চাকরি নিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি, চাকরি মেয়াদ শেষ হলেই ধরা পড়ে এই প্রতারক। এরপর প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে মিথ্য তথ্য ছড়াতে থাকেন। এ ঘটনায় রমনা থানায় সাধারণ ডায়রি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিজ গ্রাম লক্ষীপুরে গড়ে তুলেছে একটি চক্র। এই চক্রের সদস্যরা জেলার বিভিন্নস্থানে সাধারণ মানুষকে চাকরির প্রলোভন দেখাতেন। পরবর্তীতে তার কাছে নিয়ে আসলে চাকরির আশ্বাসে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে দিতেন হুমকি। বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের নাম করে লক্ষীপুরে নিজস্ব প্রভাব খাটাতেন। তার তৈরি চক্রটি দাফিয়ে বেড়াচ্ছে পুরো জেলায়। মুখ খুললে হামলা-মামলা শিকার হতে হচ্ছে ভুক্তভোগীদের।
জিডির প্রাথমিক বিবরণে জানা যায়, সবশেষ জাল সাটিফিকেট দিয়ে ২০০৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর হামদর্দ ল্যাবরেটরীজ (ওয়াকফ) বাংলাদেশে প্রটোকল এন্ড লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগে পরিচালক পদে চাকরি ভাগিয়েছিলেন ইকবাল। সেখানে কর্মরত অবস্থায় বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। পরে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর ৬০ বছর পূর্ণ হওয়ায় এই পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয় প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু ৬০ বছর পূর্ণ হওয়ার পরও চুক্তি ভিত্তিতে দুই বছর চাকরি করেন তিনি।
২০২১ সালে চাকরির মেয়াদ শেষ হলে তাকে অব্যাহতি দেয় হামদর্দ। কিন্তু পদ ছাড়তে নাজার এই প্রতারণ শুরু করে নানা তালবাহানা। কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে হামদর্দ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্য ও বানোয়াট তথ্য সরবরাহ করেন। যা ফলে প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ক্ষুন্ন হয়। এতে কর্তৃপক্ষ এসব মিথ্যা তথ্য বিরুদ্ধে প্রতিবাদ প্রকাশ করার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে রাজধানীর রমনা থানা সাধারণ ডায়রি (জিডি) করে। জিডি নম্বর-১৬৯৫।
ইকবাল মাহমুদের সাটিফিকেট জালিয়াতির সতত্য যাচাইয়ে রয়েল ইউনির্ভাসিটিতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটি থেকে ০৪০১২০৬০৩১ আইডিধারী হিসেবে ২০০৫ সালে এমবিএ উত্তীর্ণ বলে যে সাটিফিকের্ট তিনি হামদর্দ বাংলাদেশে দিয়েছিলেন, তা প্রকৃতপক্ষে জাল। বিশ্ববিদ্যালটির সিনিয়র সহকারি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এ.কে.এম ফিরোজ উদ্দিন স্বাক্ষরিত জাল সনদের প্রমাণ সম্বলিত একটি চিঠিও সাংবাদিকদের হাতে এসেছে। তিনি জানান, ইকবাল মাহমুদ চৌধুরীর এমবিএ সনদ ও নম্বরপত্র দুটিই ভূঁয়া ও জাল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ ব্যবস্থা নেয়ার করা জানিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতারণার টাকা দিয়ে রাজধানীর উত্তর ভাষানটেক ১৫০/৫ সুনিলপাড়ায় ৬ তলা বাড়ি, একই এলাকায় ১৬১/এ, এম এ হালিম রোডের তৃতীয় তলায় একটি এবং মাটিকাটা মেইনরোডে কিনেছেন আরেকটি ফ্ল্যাট। এছাড়া ট্রপিক্যাল ক্যান্টভিউয়ে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনেছেন প্রতারক ইকবাল। সাভারের জিরাবো কুটুরিয়ায় ১০ কাঠা জমি, পূর্বাচলে ১টি প্লট কিনেছেন তিনি।
এছাড়া বিলাসী জীবন যাপনের জন্য ১টি হ্যারিয়ার গাড়ি, ২টি প্রাইভেটকার রয়েছে তার। সন্তানদের বিদেশে পড়াশুনার করোনা আড়ালে পাচার করেছেন কোটি কোটি টাকা।